বাংলা

আকাশ ছুঁতে চাই ৭২

CMGPublished: 2022-05-05 19:34:31
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

কী থাকছে এবারের পর্বে

১. পরিবারের সবাইকে নিয়েই ঈদ উদযাপন করতে হবে- দিলারা মেসবাহ

২. বয়স কোন বাধা নয়

৩. গান হুই নারী: শিল্পী হা হুই

৪. সিনচিয়াংয়ের অভিনয়শিল্পী আমাতজান

চীন আন্তর্জাতিক বেতারের ঢাকা স্টেশন থেকে প্রচারিত আকাশ ছুঁতে চাই অনুষ্ঠানে সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছি আমি শান্তা মারিয়া।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই শ্রোতাদের জানাই ঈদের শুভেচ্ছা। করোনা মহামারীর ভয় ভীতি অতিক্রম করে এবারের ঈদে পরিবারের সঙ্গে আনন্দময় সময় কাটিয়েছেন অনেকেই। সেকাল ও একালের ঈদ উদযাপন নিয়ে আজ আমরা কথা বলবো বাংলাদেশের একজন বিশিষ্ট ও প্রবীণ সাহিত্যিক দিলারা মেসবাহর সঙ্গে। দিলারা মেসবাহ সমকালীন বাংলা কথাসাহিত্যের এক বিশিষ্ট নাম। দীর্ঘ চার দশক ধরে তিনি গল্প উপন্যাস ও কবিতা লিখছেন। পেয়েছেন অনেক সম্মাননা।

দিলারা মেসবাহর জন্ম ২৮ আগস্ট, ১৯৫০ সালে পাবনার বিখ্যাত লোহানী পরিবারে। পিতা তাসাদ্দুক হোসেন লোহানী ছিলেন শিক্ষাবিদ ও খ্যাতিমান সাহিত্যিক।

দিলারা মেসবাহর কাছ থেকে আজ আমরা শুনবো নারীর জীবনে ঈদ উদযাপন নিয়ে কিছু কথা। আমাদের অনুষ্ঠানে তাঁকে স্বাগত জানাই।

পরিবারের সবাইকে নিয়েই ঈদ উদযাপন করতে হবে- দিলারা মেসবাহ

সাক্ষাৎকার

সাহিত্যিক দিলারা মেসবাহ সেকালের ঈদ উদযাপনের স্মৃতিচারণ করেন। শৈশবে খাওয়া মায়ের হাতের রান্নার কথা এখনও ভুলতে পারেন না তিনি। বিশেষ করে দুধ-সেমাই খাওয়ার স্মৃতি অম্লান তার কাছে। মায়ের মমতার কারণেই হয়তো ঈদের রান্না এমন সুস্বাদু হতো বলে মনে করেন। বিয়ের পর তিনি পুরান ঢাকায় অনেকদিন বাস করেছেন। তখন পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী ঈদ উদযাপন দেখেছেন। শ্বশুরবাড়িতে ঈদ উদযাপনের স্মৃতি প্রসঙ্গে সারাদিন রান্নাঘরে কাটানোর কথাও বলেন। উৎসবের দিনে বাড়ির মেয়ে-বউদের উপর দায়িত্ব ছিল মজাদার সব খাবার রান্না করা।

দিলারা মেসবাহ মনে করেন ঈদের দিনে নারীদের উপরে যে বাড়তি কাজের চাপ থাকে তা অনেক সময় তাদের ঈদের আনন্দকে ম্লান করে দিতে পারে। তাই সাংসারিক কাজে সকলের অংশগ্রহণ ও সহযোগিতা প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি। বলেন ‘পরিবারের পুরুষ সদস্যরাও যদি ঈদের কাজে একটু সহযোগিতা করেন তাহলে একজনের উপর এত বাড়তি চাপ পড়ে না। সবাইকে নিয়েই ঈদ। পরিবারের গৃহকর্মীও যেন ঈদের দিনটি উপভোগ করতে পারেন সেদিকে খেয়াল রাখা দরকার’। তিনি নিম্ন আয়ের মানুষের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান।

বয়স কোন বাধা নয়

সুপ্রিয় শ্রোতা, ইচ্ছাশক্তি ও আগ্রহ থাকলে মানুষের জীবনে বয়স কোন বাধা নয়। এ বিষয়টি আবারও প্রমাণ করেছে চেচিয়াং শহরের একটি বিশেষ নারী ফুটবল দল যাদের সদস্যদের গড় বয়স ৪১ বছর। তাদের কথা প্রতিবেদনে।

কুয়াংতুং প্রদেশের চেচিয়াং শহর। ফুটবল ম্যাচে দর্শকদের মধ্যে প্রবল আগ্রহ। জয় পরাজয় নিয়ে চলছে টেনশন। খেলা হচ্ছে নারী ও পুরুষ দলে। সবচেয়ে বড় কথা হলো নারী দলে সদস্যদের গড় বয়স ৪১ বছর। এ দলটি মায়েদের দল নামে পরিচিত। এই দলের নারীরা আশির দশকে ফুটবল খেলতেন। কিন্তু পরে বিভিন্ন কারণে খেলা ছেড়ে দিয়েছিলেন। বিভিন্ন পেশায় চলেও গেছেন তারা। অনেকেরই আছে একাধিক সন্তান।

এই দলের সবচেয়ে বয়োজ্যেষ্ঠ সদস্য থাং চিংই। ৪৭ বছর বয়সী থাং স্কুলে থাকতে ফুটবল খেলতেন। প্রাদেশিক চ্যাম্পিয়ন টিমের সেরা খোলোয়াড় ছিলেন তিনি। তবে ১৮ বছরের পর খেলা ছেড়ে দেন থাং। কারণ তিনি ভয় পেতেন খেলা তার নারী সুলভ আকর্ষণকে ম্লান করে দেবে। তিনি বিউটিশিয়ানের পেশা গ্রহণ করেন এবং নিজের বিউটি পার্লার খোলেন। তার স্বামী রিয়েল এস্টেট কোম্পানিতে কাজ করেন। অনেক বছর পর আবার থাং ফিরে এসেছেন ক্রীড়া জগতে।

মায়েদের দলের সদস্যদের প্রত্যেকেরই রয়েছে এমন সব গল্প। তাদের কেউ শিক্ষক, কেউ কম্পিউটার বিশেষজ্ঞ, কেউ দোকান কর্মী। শখের বশেই তারা আবার খেলায় ফিরেছেন। গত মাসে তারা পুরুষদলের বিরুদ্ধে ফ্রেন্ডলি ম্যাচ খেলে পুরুষদলকে হারিয়ে দিয়েছেন।

নারীদের এই দলটি প্রমাণ করেছেন বয়স কোন বাধা নয়।

গান: হুই নারী

সুপ্রিয় শ্রোতা, চীনের মুসলিম জাতিগুলোর মধ্যে সংখ্যার দিক থেকে বৃহত্তম হুই জাতি। হুই জাতির রয়েছে নিজস্ব সংস্কৃতি । হুই জাতির একজন বিখ্যাত কণ্ঠশিল্পী হলেন হা হুই। তিনি ইসলামি ঐতিহ্য এবং হুই জাতির ঐতিহ্য নিয়ে অনেক গান পরিবেশন করেছেন। এখন আমরা হা হুইয়ের কণ্ঠে শুনবো একটি গান। গানটির শিরোনাম হুই নারী।

সিনচিয়াংয়ের অভিনয় শিল্পী আমাতজান

চীনের উইগুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল সিনচিয়াংয়ের রয়েছে সমৃদ্ধ ঐতিহ্য। উইগুর জাতির একজন নারী অভিনয় ও নৃত্যশিল্পী মায়েলা আমাতজান সম্প্রতি তার মনোমুগ্ধকর পরিবেশনায় চীনের সংস্কৃতি জগতে তারকা খ্যাতি পেয়েছেন। বিস্তারিত শুনবো প্রতিবেদনে।

উইগুর জাতির মেয়ে। মায়েলা আমাতজান। সিনচিয়াংয়ের একজন বিখ্যাত নৃত্যশিল্পী। সম্প্রতি সিনচিয়াংয়ের রাজধানী উরুমছিতে একটি নৃত্যনাট্য মঞ্চস্থ হয়। নৃত্যনাট্যটির শিরোনাম চাং ছিয়ান। নৃত্যনাট্যের কাহিনী গড়ে উঠেছে ২০২ খ্রিস্টপূর্বাব্দের পশ্চিম হান রাজবংশের রাজকীয় দূত চাং ছিয়ানের জীবন ভিত্তি করে। দুই হাজার বছর আগে চাং ছিয়ানের সিনচিয়াং সফর ও রেশম পথের প্রতিষ্ঠার কাহিনী ভিত্তিক এই ডান্স ড্রামায় প্রতিভার দ্যুতিতে দর্শকদের মুগ্ধ করেছেন আমাতজান।

৩৫ বছর বয়সী আমাতজান নাচ শিখছেন ১১ বছর বয়স থেকেই। বেইজিং থেকে নৃত্যশিল্পে উচ্চশিক্ষা সম্পন্ন করে তিনি তার জন্ম শহর উরুমছিতে ফিরে আসেন এবং সিনচিয়াং আর্ট থেয়েটারে নৃত্য শিল্পী ও অভিনয় শিল্পী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন।

গত ২০ বছর ধরে তিনি প্রতিদিন ১০ ঘন্টা নৃত্যশিল্প চর্চা করেন। সিনচিয়াং হলো নৃত্য ও সংগীতের অঞ্চল।

আমাতজান বলেন ‘ উইগুর জাতির প্রায় প্রত্যেকেই নাচগানে পারদর্শী। আমি আমার নাচের মাধ্যমে বিভিন্ন জাতির মধ্যে সাংস্কৃতিক বিনিময় বৃদ্ধিতে আবদান রাখে চাই।’

আমাতজান তার দল নিয়ে বিশ্বের ৩০টিরও বেশি দেশে নৃত্য প্রদর্শন করেছেন এবং চীনা সংস্কৃতির মাধুর্য বিভিন্ন দেশের মানুষের কাছে পৌছে দিয়েছেন।

সুপ্রিয় শ্রোতা আকাশ ছুঁতে চাই অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গেছি আমরা।

আমাদের অনুষ্ঠান আপনারা সবসময় শুনতে পাবেন শর্ট ওয়েভ ৯ হাজার ৪শ ৯০ এবং শর্ট ওয়েভ ১১ হাজার ৬শ ১০ কিলোহার্টজে। আরও শুনতে পাবেন সিআরআই বাংলার ওয়েবসাইটে এবং অবশ্যই আমাদের ফেসবুক পেজে। জেনে নিন আমাদের ইমেইল অ্যাডরেস, cmg.bangla@gmail.com আমাদের ফেসবুক পেজ facebook.com/CRIbangla এবং facebook.com/CMGbangla এবংআমাদের সাক্ষাৎকারগুলো ইউটিউবে দেখতে পাবেন। youtube.com/CMGbangla.

আজ এ পর্যন্তই। সুস্থ থাকুন ভালো থাকুন। আবার কথা হবে। চাই চিয়েন।

সার্বিক সম্পাদনা: ইয়ু কুয়াং ইউয়ে আনন্দী

লেখা, গ্রন্থনা, উপস্থাপনা : শান্তা মারিয়া

বয়স কোন বাধা নয় এবং সিনচিয়াংয়ের অভিনয়শিল্পী আমাতজান, প্রতিবেদন: শান্তা মারিয়া

অডিও সম্পাদনা: রওজায়ে জাবিদা ঐশী

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn