ড.নীলিমা ইব্রাহিম: অদম্য প্রাণের বাঙালি নারী-China Radio International
মুক্তিযুদ্ধের পর যুদ্ধাহত নারী ও যুদ্ধশিশুদের পুনর্বাসনে অসামান্য অবদান রাখা বিশিষ্টজন অধ্যাপক ড. নীলিমা ইব্রাহিম। বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্যতম উজ্জ্বল নক্ষত্র এ গুনী নারী।
যুদ্ধ পরবর্তী দেশ বিনির্মাণে ব্রতী ছিলেন নীলিমা ইব্রাহিম। মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে বুক ফুলিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা স্বাধীন দেশের স্বাদ নিতে পারলেও নির্যাতিত বীর নারীদের ঠাঁই হয়নি এ সমাজে। যুদ্ধের সময় শারীরিক অত্যাচার এবং যুদ্ধ পরবর্তী বাংলাদেশে সামাজিক প্রেক্ষাপটে মানসিক অত্যাচার সহ্য করে লড়াই করে যেতে হয়েছে তাদের। ঠিক সেই সময়ে তাদের পুনর্বাসনে বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখেছেন সমাজ সংস্কারক নীলিমা। নারী পুনর্বাসন বোর্ডের সদস্য হিসেবে ঘুরে বেড়িয়েছেন বিভিন্ন নারী পুনর্বাসন কেন্দ্র । বেঁচে থাকার উৎসাহ দিতে কথা বলেছেন তাদের সঙ্গে। সেই নির্যাতনের ইতিহাসেরই সংকলন ‘আমি বীরাঙ্গনা বলছি’। স্মৃতিচারণমূলক এ অমর গ্রন্থ রচনা করে সবকিছু ছাপিয়ে তিনি হয়ে উঠেছিলেন সবার মাঝে অনন্য। সমাজ সংস্কারে তাঁর ঐকান্তিক প্রচেষ্টার কোনো কমতি ছিলোনা। বহু জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সমাজকল্যাণ ও নারী উন্নয়ন সংস্থা এবং বুদ্ধিবৃত্তিক সংগঠনের সঙ্গে তিনি যুক্ত ছিলেন। গবেষণা, প্রবন্ধ, নাটক, ছোটগল্প, উপন্যাস, ভ্রমণকাহিনী এবং আত্মজীবনীসহ মহিয়সী এই নারী বিচরণ করেছেন সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায়।একাধিক পরিচয়ে পরিচিত এ মানুষটি ১৯২১ সালের ১১ অক্টোবর বাগেরহাট জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। বাবা প্রফুল্ল চন্দ্র রায় এবং মা কুসুম কুমারী দেবী মেয়ের নাম রেখেছিলেন নীলিমা রায় চৌধুরী। পরবর্তীতে ১৯৪৫ সালে ইন্ডিয়ান আর্মি মেডিকেল কোরের ক্যাপ্টেন ডা. মোহাম্মদ ইব্রাহিমকে বিয়ে করে নীলিমা ইব্রাহিম নামেই সমধিক পরিচিত লাভ করেন। ছোট বেলা থেকেই তীক্ষ্ম মেধার অধিকারী ছিলেন তিনি। বাংলা সাহিত্যে ডক্টরেট ডিগ্রী অর্জনকারী তিনিই প্রথম বাঙালি নারী।মহীয়সী এ গুনী নারী ২০০২ সালের ১৮ই জুন মৃত্যুবরণ করেন।
রওজায়ে জাবিদা ঐশী