বাংলা

‘বিজনেস টাইম’ পর্ব- ২১

CMGPublished: 2024-07-12 20:29:20
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

চীন ও চীনের বাইরের দুনিয়ার ব্যবসা-বাণিজ্য, অর্থনীতি-উন্নয়নের হালচাল নিয়ে নিয়মিত সাপ্তাহিক অনুষ্ঠান ‘বিজনেস টাইম’।

বিজনেস টাইম’ য়ের এই পর্বে থাকছে:

· বেইজিং য়ে বানিজ্য ও বিনিয়োগ সম্মেলনে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহবান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার

· সম্মেলনে চীনা কম্পানীগুলো বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে ১৬ টি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে।

· চীনের বাণিজ্য মেলায় প্রায় ৮৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের চুক্তি স্বাক্ষর

বেইজিংয়ে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্মেলনে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহবান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার

চীনা ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশের অবকাঠামো, জ্বালানি ও পরিষেবা খাতসহ প্রধান ধাতগুলোতে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বেইজিংয়ে বাংলাদেশ-চীন বাণিজ্য, ব্যবসা ও বিনিয়োগ সম্মেলনের উদ্বোধনের সময় এ আহ্বান জানান চীন সফররত প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাণিজ্য ও বিনিয়োগে সহযোগিতার নতুন ক্ষেত্র অন্বেষণ করার এখনই সময়। একসঙ্গে আমরা একটি সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে পারি, যাতে লাভবান হতে পারে আমাদের দেশ ও জনগণ।’

শেখ হাসিনা আশ্বস্ত করে বলেন, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সব সহযোগিতা ও সমর্থন দিতে সমস্ত দ্বার উন্মুক্ত থাকবে। তিনি বলেন, ‘আসুন আমরা আরও সমৃদ্ধ, শক্তিশালী, সংযুক্ত বিশ্ব গড়তে একসঙ্গে কাজ করি। আমি বিশ্বাস করি আমাদের হাত একত্র হলে বড় কিছু অর্জন সম্ভব।‘

চীনে চারদিনের দ্বিপক্ষীয় সফরের দ্বিতীয় দিনে সম্মেলনে যোগ দিয়ে বাংলাদেশের আইসিটি, পর্যটন, কৃষি প্রক্রিয়াকরণ শিল্প এবং উন্নয়ন খাতে বড় আকারে বিনিয়োগের জন্য চীনা উদ্যোক্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন প্রধানমন্ত্রী।

এ সময় শেখ হাসিনা বলেন, এ দেশে অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত ১০০টি অর্থনৈতিক এলাকা আছে। নির্দিষ্ট দেশভিত্তিক ৫টি বৃহৎ অর্থনৈতিক এলাকা নির্মাণের কাজও চলছে ।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে অংশীদারিত্ব অবারিত প্রতিশ্রুতি বহন করে। কারণ উভয় দেশই ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে আছে।

সম্মেলনে চীনা ভাইস মিনিস্টার অব কমার্স জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরের চীন বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয় সফর আরও গভীর হবে। তিনি বলেন,

‘’ টানা ১৩ বছর ধরে চীন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য অংশীদার বিগত বছরে ৩০০ ডলারেরও বেশি বিনিয়োগ করা হয়েছে।বাংলাদেশের সঙ্গে দীর্ঘসময় সহযোগিতা করতে চীন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।“

শেখ হাসিনা বলেন, ‘অর্থনৈতিক অগ্রগতি, প্রযুক্তিগত অগ্রগতি ও নিরন্তর উন্নয়নের জন্য আমাদের মিলিত দৃষ্টিভঙ্গি দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের মূল ভিত্তি গঠন করেছে।’

চীনা ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশ সফর করে সম্ভাবনাগুলো খুঁজে দেখা ও বাংলাদেশের জনগণের উষ্ণ আতিথেয়তার অভিজ্ঞতা নেওয়ার আমন্ত্রণ জানান প্রধানমন্ত্রী।

সম্মেলনটি বেইজিংয়ে চায়না ওয়ার্ল্ড সামিট উইংয়ের শাংগ্রি-লা সার্কেলে বাংলাদেশ দূতাবাস, বিডা, বিএসইসি ও সিসিপিআইটি যৌথভাবে আয়োজন করে। সম্মেলনে দুদেশের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ১৬ সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়। যেখানে চারটি সমঝোতা স্মারক থেকে ৪৯ কোট ডলারের বিনিয়োগ আসবে।

।। প্রতিবেদন: শাহানশাহ রাসেল

।। সম্পাদনা: ফয়সল আব্দুল্লাহ

বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্মেলনে চীনা কম্পানীগুলো বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে ১৬ টি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে।

বেইজিংয়ে বাংলাদেশ-চীন বাণিজ্য, ব্যবসা ও বিনিয়োগ সম্মেলনে চীনা কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়াতে ১৬টি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে, যেখানে বাংলাদেশ চারটি সমঝোতা স্মারকের অধীনে পাবে ৪৯ কোটি ডলারের বিনিয়োগ।

চীনা কোম্পানিগুলো বাংলাদেশের টেক্সটাইল, ইলেকট্রিক যান, সৌরবিদ্যুৎ, আর্থিক ও প্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগ করবে।

বাংলাদেশি ও চীনা কোম্পানিগুলোর মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকগুলো হলো—

১। নগদ ও হুয়াওয়ে টেকনোলজিস (বাংলাদেশ) লিমিটেডের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণে একটি পরবর্তী প্রজন্মের ডিজিটাল আর্থিক প্ল্যাটফর্ম তৈরিতে ৫ কোটি ডলারের বিনিয়োগ

২। 'বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেট ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন প্রজেক্ট' এ ডেক্স বাংলাদেশ টেক লিমিটেড এবং হুয়াওয়ে টেকনোলজিস ২ কোটি ডলারের বিনিয়োগ আসবে।

৩। দেশবন্ধু গ্রুপ, কেমটেক্স এবং চায়না কেমিক্যাল সিএনসিসির মধ্যে চীন থেকে বাংলাদেশে ৪০ কোটি ডলার বিনিয়োগ আসবে।

৪। চায়না রোড অ্যান্ড ব্রিজ কর্পোরেশন (সিআরবিসি) এবং নিংবো সিসিং কোম্পানি চাইনিজ ইকোনমিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল জোনে বিনিয়োগ

৫। বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাণের বিলিয়ন-১০ কমিউনিকেশনস লিমিটেড সাথে সিএইচটিসি ইন্টেলিজেন্ট ইভি কোম্পানির সাথে সমঝোতা স্মারক

৬। সিলেটে সোলার পার্ক স্থাপনে বিলিয়ন-১০ কমিউনিকেশনস লিমিটেড সাথে নিংবো সান ইস্ট সোলার কো. লি. একটি জন্য সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে।

৭। নবায়নযোগ্য শক্তি শিল্পে বিলিয়ন-১০ কমিউনিকেশনস লিমিটেড সাথে হেশেং সিলিকন ইন্ডাস্ট্রি কোম্পানি বিনিয়োগের করবে।

৮। বিলিয়ন-১০ কমিউনিকেশনস লিমিটেড এবং চংখে কুয়োরই (চুহাই) নিউ ম্যাটেরিয়াল টেকনোলজি কো. লি. বাংলাদেশের বর্জ্য লুব্রিকেন্ট তেল পুনরুদ্ধার এবং পরিশোধন শিল্পে বিনিয়োগের জন্য সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে।

৯। ই.বি সলিউশন লিমিটেড এবং হংচি ইন্টেলিজেন্ট ট্রান্সপোর্ট কোম্পানি লিমিটেড ঢাকা সিটি মোবাইল প্রজেক্টে বিনিয়োগের জন্য একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে।

১০। ই.বি সলিউশন লিমিটেড এবং নিংবো শেরিং নিউ এনার্জি টেকনোলজি লিমিটেড বাংলাদেশের স্মার্ট কোল্ড চেইন লজিস্টিক সলিউশন খাতে বিনিয়োগের জন্য একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে।

১১। কারিগরি ও আর্থিক বিনিয়োগ সহযোগিতার সমঝোতা স্মারকের অধীনে নদী ও সড়কপথে সিএনজি পরিবহনের জন্য বাংলাদেশে ২ কোটি ডলার বিনিয়োগ আসবে। ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশন পিএলসি এবং শিচিয়াচুয়াং এনরিক গ্যাস ইকুইপমেন্ট কো. লি.-এর মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়েছে।

১২। চিবো চিনহুয়াথেং পেপার মেশিনারি কো লি.- নিটল নিলয় গ্রুপের সাথে যৌথভাবে বাংলাদেশে কাগজের যন্ত্রপাতি খাতে বিনিয়োগ করবে। উভয় পক্ষ এ বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে।

১৩। নিটল নিলয় গ্রুপের সহযোগিতায় চীনা কোম্পানি চেংচৌ তংফেং মিড-সাউথ এন্টারপ্রাইজ কোম্পানি বাংলাদেশে টিবিআর টায়ার প্রকল্পে বিনিয়োগ করবে।

১৪। চীনা কোম্পানি শানতোং সুনাইট মেশিনারি এবং নিটল নিলয় গ্রুপ বাংলাদেশের এরেটেড অটোক্লেভ কংক্রিট (এএসি) ব্লকে বিনিয়োগের জন্য একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে।

১৫। চীনা কোম্পানি তালিয়াম হুয়াহান রাবার অ্যান্ড প্লাস্টিক মেশিনারি নিটল নিলয় গ্রুপের সঙ্গে বাংলাদেশের রাবার মেশিনারিতে বিনিয়োগ করবে।

১৬। নিটল নিলয় গ্রুপের সঙ্গে যৌথভাবে বাংলাদেশে লিথিয়াম ব্যাটারি এবং বৈদ্যুতিক যানবাহনে বিনিয়োগ করবে চীনা কোম্পানি জেপি টেকনোলজি (আনহুই) কোম্পানি লিমিটেড।

।। প্রতিবেদন: ফয়সল আব্দুল্লাহ

।। সম্পাদনা: শাহানশাহ রাসেল

চীনের বাণিজ্য মেলায় প্রায় ৮৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের চুক্তি স্বাক্ষর

চলতি বছরের ৩০তম চায়না ল্যানচৌ বিনিয়োগ ও বাণিজ্য মেলায় ৮৪দশমিক ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে, যা গেল বছরের বাণিজ্য মেলার তুলনায় ৭ দশমিক ৭ শতাংশ বেশি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ তথ্য জানিয়েছে।

বুধবার উত্তর-পশ্চিম চীনের কানসু প্রদেশে শেষ হয়েছে ৩০তম চায়না ল্যানচৌ বিনিয়োগ ও বাণিজ্য মেলা। এবারের মেলায় দেশ ও বিদেশের ২ হাজার ২০০ ব্যবসা ও প্রতিষ্ঠানকে আকৃষ্ট করেছে, এর আগের বছর যার সংখ্যা ছিল ১৬০০।

১৯৯৩ সালে ল্যানচৌতে প্রথম এই মেলা অনুষ্ঠিত হয়, যা বেল্ট অ্যান্ড রোড অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সহযোগিতার জন্য একটি প্রধান ইভেন্ট হিসেবে সুপরিচিত।

২০১৪ সালে এই মেলায় প্রথম অংশ নেয় বেলারুশের উদ্যোক্তা মেরিনা অনিকেয়েভা। এবছরও এ মেলায় অংশ নিয়ে তিনি বলেন, “গত এক দশকে, ল্যানচৌর এই মেলা বড় পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে গেছে। দিনে দিনে এই বাণিজ্য মেলা বিভিন্ন দেশ ও অঞ্চলের ব্যাপক সংখ্যক ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানকে আকৃষ্ট করেছে”।

প্রতিবেদন- আফরিন মিম

সম্পাদনা- শান্তা মারিয়া

প্রযোজনা ও উপস্থাপনা: শাহানশাহ রাসেল

অডিও সম্পাদনা: নাজমুল হক রাইয়ান

সার্বিক তত্ত্বাবধান: ইউ কুয়াং ইউয়ে আনন্দী

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn