বাংলা

‘বিজনেস টাইম’ পর্ব- ১৫

CMGPublished: 2024-05-31 23:04:32
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

চীন ও চীনের বাইরের দুনিয়ার ব্যবসা-বাণিজ্য, অর্থনীতি-উন্নয়নের হালচাল নিয়ে নিয়মিত সাপ্তাহিক অনুষ্ঠান ‘বিজনেস টাইম’।

বিজনেস টাইম’ য়ের এই পর্বে থাকছে:

· চীন যেভাবে কম খরচে বানাচ্ছে সবুজ প্রযুক্তি

· বাংলাদেশ সরকারের আসন্ন চীন সফর থেকে প্রত্যাশা: সাক্ষাৎকার

চীন যেভাবে কম খরচে বানাচ্ছে সবুজ প্রযুক্তি

চীনের পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তিগুলো নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মাথাব্যথার দুটো বড় কারণ—এগুলো দামে কম এবং বিশ্ব বাজারে জনপ্রিয় হচ্ছে দ্রুত। এরপরই তারা দাবি করতে শুরু করে, চীন ভর্তুকি দিয়ে এবং ইচ্ছে করে কম দামে পণ্যগুলো বাজারে বেশি করে ছাড়ছে।

এ ধরনের পরিবেশ অবান্ধব অভিযোগে যদি কান ভারী হয়ে আসে, তবে প্রথমেই আপনাকে যেতে হবে পূর্ব চীনের হফেই প্রদেশের বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা নিওর কারখানায়। সেখানে কাজ করছে সারি সারি রোবটিক বাহু। এ কারখানার রোবটগুলো একটি গাড়ির চারটি দরজা লাগাতে সময় নেয় মাত্র ৯৮ সেকেন্ড। এখানকার আট শতাধিক রোবটের কাজ এতই নিখুঁত যে তাদের ভুলের সীমা মাত্র দশমিক ৫ মিলিমিটার। এখানে একটি গাড়ির অর্ডার পাওয়া থেকে তা বিতরণে সময় লাগে মাত্র ১৪ দিন।

কম সময় মানেই কম খরচ, আর রোবট ও এআইয়ের সমন্বয়ে এখানে নির্ভুল কাজ হয় বলে ভক্সওয়াগেনের মডুলার ইলেকট্রিক ড্রাইভ প্লাটফর্ম ফ্যাক্টরিও এখন হফেইতে। চীনের বিশ্বখ্যাত ইলেকট্রিক কার ব্র্যান্ড বিওয়াইডিও তাদের একটি কারখানা স্থাপন করেছে এখানে।

শুধু রোবট নয়, পরিবেশবান্ধব গাড়ির প্রযুক্তির উন্নয়নে বাজেটও একটা বড় বিষয়। গত বছর বিওয়াইডির বার্ষিক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ওই বছর প্রতিষ্ঠানটি গবেষণা ও উন্নয়নে ব্যয় করেছে প্রায় ৫৪৭ কোটি ডলার। যা এর আগের বছরের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি। এমনকি গবেষণায় বিওয়াইডি ছাড়িয়ে গেছে আমেরিকান বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্র্যান্ড টেসলাকেও।

গত ফেব্রুয়ারিতে একটি বৈশ্বিক পেটেন্ট ডাটাবেজ সংস্থার প্রতিবেদনে দেখা গেছে চীনের এনইভি সেক্টরে মেধাস্বত্ত্বের আবেদন বেড়েছে প্রায় ২২ শতাংশ। অর্থাৎ শুধু উৎপাদন নয়, গবেষণা ও আবিষ্কারেও দুর্দান্ত গতিতে এগোচ্ছে চীন।

এদিকে ওভারক্যাপিসিটির মার্কিন অভিযোগের তর্জনি উঠেছিল সোলার প্যানেলের দিকেও। সেটার জবাবও মিলবে হফেইতে স্থাপিত জে এ সোলার কোম্পানি পরিদর্শনে গেলে।

যেখানে সোলার প্যানেল তৈরিতে ব্যবহৃত হচ্ছে ফাইভ জি সমৃদ্ধ অগমেন্টেড প্রযুক্তি। এ প্রতিষ্ঠানে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার করে চলছে অ্যাসেম্বলি মেশিন। কাজ চলছে ভয়েস কমান্ডে। আবার সোলার প্যানেলের একেকটি ব্যাচে কোনো ত্রুটি আছে কিনা তা জানা যাচ্ছে এক সেকেন্ডেরও কম সময়ে।

অন্যদিকে হফেইর আরেক সোলার এনার্জি প্রতিষ্ঠান সুংরো পাওয়ার সাপ্লাই তাদের কারখানায় ব্যবহার করছে এআই। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তারা তৈরি করেছে প্রিডায়াগনস্টিক সিস্টেম। যার সাহায্যে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই চব্বিশ ঘণ্টা নজর রাখা যাচ্ছে ভোল্টেজ, তাপমাত্রা ইত্যাদির ওপর।

অপরদিকে পিটিএল নামের লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটির চিয়াংশু প্রদেশের ছাংচৌতে ছয় হাজার বর্গমিটারের বড়সড় একটি ওয়্যারহাউস আছে। যেখানে কাজ করছে বুদ্ধিমান ফোর্কলিফট ও ট্রান্সপোর্ট রোবটের একটি বিশাল বাহিনী।

এখানকার যন্ত্রপাতিগুলো সব স্বয়ংক্রিয় ও এআইচালিত। লিথিয়াম ব্যাটারির জন্য কাঁচামালের রসদ আনা-নেওয়া ও অ্যাসেম্বলিং করছে এরা।

প্রযুক্তির কারণে এই স্টোরেজটির আকার ৩০ শতাংশ কমলেও অপারেশনাল দক্ষতা বেড়েছে ৭০ শতাংশ।

শুধু যন্ত্রপাতি উন্নত হয়েছে তা নয়, চিয়াংশুর লিয়াংয়ে গেলে দেখা যাবে চাইনিজ একাডেমি অব সায়েন্সের বিজ্ঞানীরা তাদের গবেষণা কেন্দ্রগুলো তৈরি করেছেন শিল্প-চেইনের কাছাকাছি। অর্থাৎ তারা গবেষণা করে যা পাচ্ছেন তা সঙ্গে সঙ্গে চলে যাচ্ছে কারখানায়। আবার লিথিয়াম ব্যাটারি কোম্পানিগুলোর কাঁচামাল সরবরাহকারীরাও এখন নিজেদের অফিস নিয়ে এসেছে কারখানার কাছাকাছি।

গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের ক্রান্তিলগ্নে আছে আমাদের বিশ্ব। এখন আমাদের বেশি বেশি পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির প্রয়োজন, দরকার বেশি পরিমাণে সোলার প্যানেল, বৈদ্যুতিক গাড়ি ও উন্নতমানের ব্যাটারি।

চীনের কাছ থেকে এখন বাদবাকি দেশগুলোর যেমন নতুন দিনের প্রযুক্তি দরকার, তেমনি শিখে নিতে হবে এসব অত্যাধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর উৎপাদন ব্যবস্থা। অথচ, পরিবেশ রক্ষার কাজে উৎসাহ তো দূরে থাক, উল্টো ওভারক্যাপাসিটির মতো অবাঞ্ছিত শব্দ প্রয়োগ করে পরিবেশ আরও ঘোলা করছে পশ্চিমারা।

।। প্রতিবেদন: ফয়সল আব্দুল্লাহ

।। সম্পাদনা: শাহানশাহ রাসেল

বাংলাদেশ সরকারের আসন্ন চীন সফর থেকে প্রত্যাশা: সাক্ষাৎকার

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীসহ ও প্রতিনিধি দলের আসন্ন চীন সফর নিয়ে প্রত্যাশা পাশাপাশি দুই দেশের বিদ্যমান সম্পর্কের কি উন্নতি হতে পারে তা নিয়ে চায়না আন্তর্জাতিক বেতারকে তার মতামত দিয়েছেন অর্থনীতি বিশ্লেষক ব্যারিস্টার সৈয়দ মাহসিব হোসেন।

প্রযোজনা ও উপস্থাপনা: শাহানশাহ রাসেল

অডিও সম্পাদনা: নাজমুল হক রাইয়ান

সার্বিক তত্ত্বাবধান: ইউ কুয়াং ইউয়ে আনন্দী

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn