‘বিজনেস টাইম’ পর্ব- ১১
চীন ও চীনের বাইরের দুনিয়ার ব্যবসা-বাণিজ্য, অর্থনীতি-উন্নয়নের হালচাল নিয়ে নিয়মিত সাপ্তাহিক অনুষ্ঠান ‘বিজনেস টাইম’।
বিজনেস টাইম’ য়ের এই পর্বে থাকছে:
১। চীনা কোম্পানি বেপজা অর্থনৈতিক জোনে ১৯.৯৭ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে
২। চীনের সঙ্গে হাত মিলিয়ে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্প
৩। একজন ব্যবসায়ির দৃষ্টিতে দীর্ঘ ৪০ বছরে ধরে তার দেখা চীন
ভীন দেশে চীন
চীনা কোম্পানি বেপজা অর্থনৈতিক জোনে ১৯.৯৭ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে
চীনা মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান এসবিএস জিপার বাংলাদেশ কোম্পানি লিমিটেড বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলে ১৯.৯৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগে একটি গার্মেন্টস এক্সেসরিস কারখানা স্থাপন করতে যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে সম্প্রতি ঢাকায় প্রতিষ্ঠানটির সাথে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ রপ্তানী প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ (বেপজা)।
বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল আবুল কালাম মোহাম্মদ জিয়াউর রহমানের উপস্থিতিতে বেপজার সদস্য (বিনিয়োগ উন্নয়ন) আলী রেজা মজিদ এবং এসবিএস জিপার বাংলাদেশ কোম্পানি লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াইফাং শেন নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
চীনা প্রতিষ্ঠানটি বার্ষিক ২৭১ মিলিয়ন পিস মেটাল জিপার, নাইলন বা প্লাস্টিক জিপার, স্লাইডার, চেইন, জিপার পার্টস, টেপস, প্লাস্টিকের বোতাম, বোতামের পার্টস, মোল্ড উৎপাদন করবে যেখানে ২০৬৩ জন বাংলাদেশি নাগরিকের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে।
বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলকে বিনিয়োগ গন্তব্য হিসেবে নির্বাচনের জন্য এসবিএস জিপারকে ধন্যবাদ জানান বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান। তিনি এসবিএস জিপার বাংলাদেশকে তাদের উৎপাদন এবং রপ্তানি শুরু করতে সার্বক্ষনিক সব ধরনের সেবা প্রদানের আশ্বাস দেন।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বেপজার সদস্য (প্রকৌশল) মোহাম্মদ ফারুক আলম, সদস্য (অর্থ) মো. আশরাফুল কবীর, নির্বাহী পরিচালক (প্রশাসন) আ ন ম ফয়জুল হক, নির্বাহী পরিচালক (বিনিয়োগ উন্নয়ন) মো. তানভীর হোসেন, নির্বাহী পরিচালক (এন্টারপ্রাইস সার্ভিসেস) মো. খুরশীদ আলম এবং নির্বাহী পরিচালক (জনসংযোগ) এ.এস.এম. আনোয়ার পারভেজসহ কোম্পানির প্রতিনিধিগণ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, এসবিএস জিপার বাংলাদেশ কোম্পানি লিমিটেড বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ জিপার উৎপাদনকারি প্রতিষ্ঠান এসবিএস জিপারের সহযোগী প্রতিষ্ঠান, বৈশ্বিক জিপার উৎপাদনে যাদের অবস্থান চীনে প্রথম এবং বিশ্বে দ্বিতীয়।
প্রতিবেদন- আফরিন মিম
সম্পাদনা- শান্তা মারিয়া
চীনের সঙ্গে হাত মিলিয়ে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্প
সম্প্রতি ঢাকায় বাংলাদেশ ইউনিভারসিটি অব ফ্যাশন এন্ড টেকনোলজি-বিইউএফটি এবং চায়না টেক্সটাইল ইঞ্জিয়ারিং সোসাইটির আয়োজনে দিনব্যাপী এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে চীনের অনেক শীর্ষ শিল্প প্রতিষ্ঠানের প্রধান ব্যক্তিরা অংশ নেন।
বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষার জন্য চীনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বৃত্তির সুযোগ, চীনা ব্যবসায়ীদের এদেশে বিনিয়োগের প্রত্যাশা, টেক্সটাইল শিল্পের উন্নত প্রযুক্তির পরিচয় ইত্যাদি বিষয়ও আলোচিত হয় এই সম্মেলনে। আয়োজনের শেষাংশে বিইউএফটি ও সিটিইএস এর মধ্যে একটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের সম্পর্কে প্রশংসা করেন ডংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের টেক্সটাইল অনুষদের ভাইস ডিন ওয়াং সিয়ানফেং।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস. এম. মাহফুজুর রহমান, বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মোজাফফর উদ্দিন সিদ্দিক, বাংলাদেশে চীনা দূতাবাসের ইকোনমিক অ্যান্ড কমার্শিয়াল কাউন্সিলর সং ইয়াং, সিটিইএস’র পরিচালক ওয়াং চেং, চায়না টেক্সটাইল এন্ড অ্যাপারেল কাউন্সিল (ইউনাইটেড টেস্টিং সেন্টার) এর পরিচালক ইয়াং হোংসান, চায়না ন্যাশনাল গার্মেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সহ সভাপতি ইয়াং সিয়াওডং, বাংলাদেশের টেক্সটাইল এন্ড গার্মেন্ট ব্রাঞ্চ অব চায়না এন্টারপ্রাইজেজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মাইক কে, ডংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের টেক্সটাইল অনুষদের ভাইস ডিন ওয়াং সিয়ানফেং এবং সিনকেমিক্যাল ফাইবার কোম্পানি লিমিটেডের প্রধান প্রকৌশলী জি ইউটিং। সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিইউএফটি’র উপ- উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইঞ্জিনিয়ার আইয়ুব নবী খান। সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, শিল্পপতি ও পরিচালক, চীনা বিশেষজ্ঞসহ এ খাতের সাথে সংশ্লিস্ট চীনের ৩২ টি প্রতিষ্ঠানের ৪২ জন প্রতিনিধি , বিইউএফটি’র রেজিস্ট্রার, ডিন, বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষক–কর্মকর্তারা ও বাছাইকৃত শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। সম্মেলনে চীনা টেক্সটাইল যন্ত্র ও পন্যসামগ্রী প্রদর্শনীর ব্যবস্থা ছিল।
সম্মেলনের পর টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং সোসাইটির প্রেসিডেন্ট ওয়াং ছেং বিশেষ আলাপচারিতায় সিএমজি বাংলাকে জানান বেল্ট এন্ড রোড উদ্যোগের আওতায় এটা তাদের প্রথম উদ্যোগ। এই উদ্যোগের প্রথম তালিকাতে রয়েছে বাংলাদেশ।
পরিসংখ্যান বলছে, চীন পোশাক তৈরিতে বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী দেশ এবং রপ্তানীতে প্রথম। বাংলাদেশ পোশাক রপ্তানীতে বিশ্বে দ্বিতীয় স্থান দখল করে আছে। চীনা ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
সম্মেলনকে দুই দেশের জন্যই সম্ভাবনাময় মনে করছেন বিইউএফটির উপ উপাচার্য ড. আইয়ুব নবী খান।নয় বছর ধরে বাংলাদেশে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেছেন একজন চায়না নাগরিক। অল্প সময়ে এ দেশের উন্নয়নের প্রশংসা করেছেন তিনি।
এই ফোরামের ফোকাস ছিল আন্তর্জাতিক টেক্সটাইল প্রযুক্তিকে একীভূত করার বিষয়ে আলোচনা করা এবং শেষ পর্যন্ত টেক্সটাইল খাতে চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে সহযোগিতার জোরদার । উদ্ভাবন, টেকসই এবং প্রযুক্তিগত অগ্রগতির উপর জোর দিয়ে, সম্মেলনের লক্ষ্য ছিল শিল্পে পারস্পরিক সম্পর্ক বৃদ্ধি এবং উন্নয়নের জন্য একটি পথ-নির্দেশিকা প্রস্তুত করা।
।। প্রতিবেদন: শাহানশাহ রাসেল
।। সম্পাদনা: শান্তা মারিয়া
সাক্ষাৎকার:
একজন ব্যবসায়ির দৃষ্টিতে দীর্ঘ ৪০ বছরে তার দেখা চীন
চীনের পরিবেশ.ব্যবসা-বাণিজ্য, প্রযুক্তি ও উন্নয়ন পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেছেন চায়না বাংলাদেশ চেম্বার অব্ কমার্স এন্ড ইন্ড্রাস্ট্রিজয়ের উপদেষ্টা, বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিল এসোসিয়েশনের পরিচালক ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ি জনাব খোরশেদ আলম। শিল্পে প্রযুক্তির ব্যবহার, বিনিয়োগের উন্নত পরিবেশ, উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা চীনের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে বলে জানান তিনি। তিনি আরও জানান, অতি অল্প সময়ে সুনিদিষ্ট পরিকল্পনার মাধ্যমে চীন এটা সম্ভব করেছে যা বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশের জন্য অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত।
প্রযোজনা ও উপস্থাপনা: শাহানশাহ রাসেল
অডিও সম্পাদনা: নাজমুল হক রাইয়ান
সার্বিক তত্ত্বাবধান: ইউ কুয়াং ইউয়ে আনন্দী