চীনের অর্থনীতির নতুন মডেল ‘শেয়ার্ড ফার্ম’
শান্তা মারিয়া, চীন আন্তর্জাতিক বেতার: শেয়ার্ড ফার্ম যার অর্থ সহজ শর্তে বড় জমিকে টুকরো টুকরো করে চাষ করার এক পদ্ধতি। অভিনব এই কৃষি অর্থনীতির মডেল পাল্টে দিয়েছে গ্রামের চেহারা, আগের চেয়েও অধিক আয় করতে পারছেন কৃষকরা।
এই গ্রামটির নাম তুথাং। যার অবস্থান মধ্যচীনের হুপ্যেই প্রদেশের উহান সিটিতে। সম্প্রতি নতুন ইকোনোমিক মডেল ব্যবহার করে দারুণ সাফল্য পেয়েছেন গ্রামবাসীরা।
১.৮ হেক্টর জমিকে ১২শ টুকরো করা হয়েছে। এখানকার বাসিন্দারা একটি করে টুকরোয় সবজি চাষ করছেন। জমিতে উৎপন্ন আলু, ভুট্টা এবং অন্যান্য কৃষিপণ্যর মালিক হচ্ছে এখানকার বাসিন্দারা। স্থানীয় মানুষদের সঙ্গে সহজ কিছু চুক্তিতে শহরের বাসিন্দারা টুকরো জমিতে নিজের জন্য সবজি চাষ করতে পারেন।
সিপিসি তুথাং গ্রাম শাখার ফার্স্ট সেক্রেটারি কা থিয়ানছাই বলেন, আমাদের স্মার্ট শেয়ারড সবজি ক্ষেত আছে। প্রতি অংশের সবজি স্মার্ট মনিটরিংয়ের আওতায় আছে। যখন বাসিন্দারা এই ক্ষেতটির দেখাশোনার ভার নেয় তখন তারা তাদের পণ্য ২৪ ঘন্টাই নজরে রাখতে পারে।
এই শেয়ার্ড ফার্ম পদ্ধতিতে গ্রামবাসীদের পাশাপাশি লাভবান হতে পারছেন শহরবাসীরাও।
কা থিয়ানছাই আরও বলেন, “এই মডেল অবলম্বনের আগে আমাদের চাষীরা বছরে প্রতি হেক্টর জমিতে ৪১৭০ মার্কিন ডলার আয় করতেন। তারা সবজি বা ধান চাষ করতেন। আমরা এক মু পরিমাণ জমিকে চল্লিশ টুকরায় ভাগ করেছি। এতে এক মু থেকে ৫ হাজার ৫৭৬ ডলার আয় হচ্ছে। এটা একজন চাষীর জন্য অনেক লাভজনক”।
একজন শহুরে বাসিন্দা যখন এক টুকরো জমি নেন তখন তিনি হয়তো সন্তানদের নিয়ে সপ্তাহে তার জমির ফসল দেখতে আসেন। তিনি টাটকা সবজি যেমন নিজের জন্য নিতে পারেন তেমনি পরিবার নিয়ে গ্রামে বেড়ানোর আনন্দটাও পান।
উহানের বাসিন্দা ফাং ছাং জানান, “অবসর সময়ে আমি আমার পরিবার ও শিশুদের নিয়ে এখানে আসি, কৃষক জীবনের অভিজ্ঞতা ও আনন্দ পাই। পাশাপাশি আমরা নিরাপদ খাদ্য ফলাতে পারি। এরফলে এখানকার চাষীদের আয়ও বাড়ছে। আমি এই শেয়ারড মডেলের পক্ষে আছি”।
শহরের বাসিন্দাদের গ্রামে ফিরে আসা ও টুকরো জমিতে চাষ করা যেমন এক দিকে সচল রেখেছে গ্রামের অর্থনীতি অন্যদিকে প্রতিনিয়তই সমৃদ্ধ হচ্ছে স্থানীয় পর্যটন শিল্প ।