বাংলা

সি চিনপিংয়ের থাইল্যান্ড সফরের নানা সাফল্য

cmgPublished: 2022-11-24 19:54:39
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

সাজিদ রাজু, চীন আন্তর্জাতিক বেতার: থাইল্যান্ডসহ এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সহযোগিতা সংস্থা অ্যাপেকের দেশগুলোর সফর করেছেন চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিনপিং। বিশেষ করে থাইল্যান্ডে ৩ দিনব্যাপী তার এই স্বস্ত্রীক সফরে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক নানা সাফল্য অর্জিত হয়েছে বলে জানিয়েছে চীন। বিশ্লেষকরা বলছেন, যেসব বিষয়ে একমত হয়ে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুই দেশ, কার্যকর হলে টেকসই ও অংশগ্রহণমূলক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

১৭ নভেম্বর থাইল্যান্ডের সুবর্ণভূমি আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে পৌঁছায় চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিনপিংকে বহনকারী এয়ার চায়নার বিশেষ বিমান। সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী ফেং লিইউয়ান। স্বস্ত্রীক তাদের স্বাগত জানান থাই প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুত চান-ওচা। সঙ্গে ছিলেন উভয় দেশের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা।

বিমানবন্দরের সড়ক জুড়ে নিজ নিজ দেশের পতাকা ও ব্যানার নিয়ে দাড়িয়ে ছিলেন থাইল্যান্ডে কর্মরত চীনা কর্মী ও শিক্ষার্থীসহ দুই দেশের নাগরিকরা। এ সময় হাত নেড়ে অতিথিদের স্বাগত জানান তারা।

চীনা কর্মকর্তারা বলছেন, প্রেসিডেন্ট সি চিনপিংয়ের তিন দিনের এই সফর সফল হয়েছে। অগ্রগতি হয়েছে দুই দেশের উন্নয়ন পরিকল্পনার সহযোগিতামূলক পদক্ষেপগুলোর। এক লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, পরস্পরের প্রতি প্রতিশ্রুতিশীল থেকে যৌথভাবে এই অঞ্চলের উন্নয়নকে এগিয়ে নেওয়া এবং এশিয়া-প্যাসিফিক সহযোগিতাকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিতে চান তিনি।

সি চিনপিং, চীনা প্রেসিডেন্ট

এ সময় সবার অংশিদাত্বের ক্ষেত্রে মানুষকেন্দ্রীক উন্নয়ন, উন্মুক্তকরণ, উন্নতমানের সংযোগ স্থাপন এবং স্থিতিশীল সরবরাহ ও শিল্পোৎপাদনসহ ৬দফা প্রস্তাবও দেন সি চিনপিং।

চলতি বছর পালিত হচ্ছে চীন-থাইল্যান্ড কূটনৈতিক সম্পর্কের ৪৭তম বর্ষপূর্তি। একইসঙ্গে চীন-থাইল্যান্ড সমন্বিত কৌশলগত সহযোগিতার ১০তম বছর। সফরে চীন-থাইল্যান্ড যৌথ কর্মপরিকল্পনা সাক্ষরিত হয়। এর মাধ্যমে দুই দেশ সিল্করোড ইকোনমিক বেল্ট এবং ২১ শতকের মেরিটাইম সিল্ক রোডের উন্নয়নে কাজ করবে। সমঝোতা হয় আরো কিছু সহযোগিতামূলক কার্যক্রমের ব্যাপারে।

এদিকে এসব কার্যক্রমের পাশাপাশি থাইল্যান্ডের রাজা মাহা ভাজিরালঙ্কর্ণ এবং রানি সুথিদা বাজরাসুধা-বিমালালাকশানার সঙ্গে বৈঠক হয় সি চিনপিং ও তার স্ত্রী ফেং লিইউয়ান।

সাইডলাইনে বৈঠক হয় সি চিনপিং পত্নী ফেং লিইউয়ানের সঙ্গে বৈঠক হয় ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদোর স্ত্রী ও থাই প্রধানমন্ত্রীর স্ত্রীর সঙ্গেও। সি চিনপিংয়ের সফরের পাশাপাশি এই ‘লেডি ডিপ্লোম্যাসি বা নারী কূটনীতি’ এবারের সফরে যোগ করে এক ভিন্ন মাত্রা।

এদিকে, ১৮ নভেম্বর অ্যাপেক নেতাদের ২৯তম সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন চীনা প্রেসিডেন্ট। এ সময় কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দায়িত্বপালন এবং এক সঙ্গে কাজ করার মাধ্যমে এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের অভিন্ন ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার আহ্বান জানান সি চিনপিং। পরের দিন কথা বলেন বাণিজ্য ও বিনিয়োগের নানা ক্ষেত্র নিয়ে। আলোচনায় উঠে আসে করোনা পরবর্তী অর্থনৈতিক সংস্কার প্রসঙ্গ।

এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলোর জনসংখ্যা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৬০ শতাংশ। আবার পুরো বিশ্বের মোট বাণিজ্যের অর্ধেকই হয় এই অঞ্চলে। ফলে এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক গুরুত্ব অনেক। তার উপর অ্যাপেকভুক্ত দেশগুলোর নেতাদের গেল ৪ বছরের মধ্যে এটাই প্রথম সরাসরি বৈঠক। তাই সব পক্ষেরই প্রত্যাশা ছিলো, নিজ নিজ দেশ ও অঞ্চলের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতায় পারস্পরিক সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্ক শক্তিশালী করার। বিশ্লেষকরা বলছেন, চীনের সঙ্গে থাইল্যান্ডসহ পুরো অঞ্চলের দেশগুলোর সম্পর্কে নতুন মাত্রা পেয়েছে সি চিনপিংয়ের এই সফরের মাধ্যমে।

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn