বিশ্বের ৪০ শতাংশ সাইকেলের জোগান দিচ্ছে চীন
হাবিবুর রহমান অভি, চীন আন্তর্জাতিক বেতার: সারা বিশ্বের বাইসাইকেল বাজারের প্রায় ৪০ শতাংশ চাহিদা পূরণ করে চীনের হেবেই প্রদেশের পিংসিয়াং কাউন্টি। এই কাউন্টিতেই গড়ে উঠেছে বাইসাইকেল তৈরির আড়াই হাজার প্রতিষ্ঠান। চীনের হেবেই প্রদেশের পিংসিয়াং স্থানীয় অর্থনীতি বিভাগ বলছে, একই ছাদের নিচে সব ধরনের সরঞ্জাম রাখার সুযোগ থাকায়, সাইকেল উৎপাদনেও গতি এসেছে। ফলে বিশ্বের বাইসাইকেলের বাজারে চীনা কোম্পানিগুলোর অবস্থান এখন বেশ পাকাপোক্ত। হাবিবুর রহমান অভির প্রতিবেদন।
এই ভাস্কর্যই বলে দেবে, আপনি আছেন বাইসাইকেলের নগরীতে।
বাইসাইকেল তৈরির জন্য বিশ্বব্যাপী বিখ্যাত চীনের হেবেই প্রদেশ। প্রদেশের পিংসিয়াং কাউন্টিতে ছোট বড় মিলিয়ে এখানে আছে প্রায় ২৬০০ বাইসাইকেল তৈরির প্রতিষ্ঠান। যেখান থেকে প্রতিবছর তৈরি করা হয় প্রায় ১০ মিলিয়ন বাই সাইকেল আর ৫০ মিলিয়ন বেবি ক্যারিজেস।
তং হংঝি, মহাব্যবস্থাপক, হেবেই ইলেকট্রিক টয় কোম্পানি
“আমরা এখানে আন্তর্জাতিক মানের বাইসাইকেল তৈরি করি। আমাদের বাইসাইকেলগুলো ওজনে হালকা ও বেশ আরামদায়ক। এ কারণে কম সময়ে জনপ্রিয় হয়েছে। এগুলো আমরা স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক মার্কেটে বিক্রি করি।“
এই কর্মকর্তা জানান, আগে প্রযুক্তির ব্যবহার না থাকায় সাইকেলের বিভিন্ন অংশ বিভিন্ন জায়গা থেকে সংগ্রহ করে সংযুক্ত করতে হতো। ফলে পুরো প্রক্রিয়াটি ছিলো সময় সাপেক্ষ ও ব্যয়বহুল। কিন্তু এখন ব্যবহার করা হয় সর্বোচ্চ প্রযুক্তি। ফলে একই ছাদের নিচে সব ধরনের সরঞ্জাম তৈরি করে তা ব্যবহার করা যায়।
"এ ধরনের প্রতিষ্ঠান ভালোভাবে চালানোর জন্য আমাদের প্রয়োজন দক্ষ প্রকৌশলী। এর পাশাপাশি আমাদের প্রয়োজন হয় গবেষণার, কোন ধরনের সাইকেল মানুষ বেশি পছন্দ করবে তার উপর নির্ভর করেই পরবর্তী উৎপাদন প্রক্রিয়াতে যেতে হয় আমাদের।"
কোম্পানিগুলোর সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করে বিভিন্ন কারিগরি বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলো। এতে যেমন একদিকে শিক্ষার্থীরা কাজের সুযোগ পায় তেমনি সাইকেল তৈরির প্রতিষ্ঠানগুলো উৎপাদন প্রক্রিয়ায় আনতে পারে নতুনত্ব। তবে এ দুয়ের মধ্যে সমন্বয় করাটা সব সময় সহজ হয়না।
তেং ছেংসুন, সভাপতি, পিংসিয়াং বাইসাইকেল অ্যাসোসিয়েশন
"যদি কোন একটি উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান বিশ্ববিদ্যালয় এবং বৈজ্ঞানিক গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমন্বয় করার চেষ্টা করে তবে অনেক সময় তাদের সাড়া পাওয়া যায় না। এ কারণে কখনো কখনো দক্ষ কর্মী পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে।"
সম্প্রতি প্রচলিত বিজনেস কাঠামো ভেঙে দিয়ে একসঙ্গে কাজ করার নতুন মডেল স্থাপন করেছে পিংসিয়াং কাউন্টির উদ্যোক্তারা। এতে করে সরঞ্জাম সংগ্রহ থেকে শুরু করে বাইসাইকেল উৎপাদন পর্যন্ত প্রতিটি ক্ষেত্রে আলাদা আলাদা প্রতিষ্ঠান একসঙ্গে কাজ করছে। এমনকি উৎপাদন কাজ শেষ হলে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের জন্য রয়েছে নির্ধারিত প্রতিষ্ঠান। পুরো প্রক্রিয়াকে বলা হচ্ছে ইন্ডাস্ট্রিয়াল ক্লাসটার মেথড। আর এতসব কার্যক্রম সহজে পরিচালনার জন্য জন্য সরকারের পক্ষ থেকে উদ্যোক্তাদের দেয়া হচ্ছে প্রণোদনা।