সার ও তেলের দাম বৃদ্ধিতে বেড়েছে উৎপাদন খরচ
আফরিন মিম, চীন আন্তর্জাতিক বেতার: বাংলাদেশে চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহেই বেড়েছে ইউরিয়া সার ও জ্বালানি তেলের দাম। একে তো খরা; তার ওপর জ্বালানি তেল ও সারের দাম বৃদ্ধিতে চাষাবাদে চরম অস্থিরতা তৈরি হয়েছে।
উৎপাদন ব্যয়ে হিমশিম খাচ্ছে কৃষক। মাত্র এক বছরে আমন আবাদে খরচ বেড়েছে দুইগুণ। এ অবস্থা চলতে থাকলে থেমে যাবে উৎপাদন, বলছেন চাষিরা।
চীন আন্তর্জাতিক বেতারের সাথে কথা হয় টাংগাইলের গোলাবাড়ি ইউনিয়নের কৃষক আক্কাসের সাথে। তিনি জানান তার আক্ষেপের কথা। তিনি বলেন, “হুট করে তেল, সারের দাম বাড়ায় আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি” ।
ইউরিয়া সারের দাম বাড়লেও টিএসপি, পটাশ সারও বেশি দামে কিনতে হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন বর্গাচাষী আলম। তিনি জানান, “সরকার ইউরিয়া সারের দাম বাড়ায় দিছে। কিন্তু অন্য সারগুলাও আমাদের বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। ডিলারা দাম বেশি নিচ্ছে। এজন্য সরকারের পদক্ষেপ নেওয়া উচিত”।
এদিকে উৎপাদনে আগের চেয়ে বেশি খরচ হচ্ছে বলে জানান আরেক কৃষক মোঃ লিটন। তিনি বলেন, “তেলের দাম বাড়ছে, সারের দাম বাড়ছে, বীজ,কীটনাশকের দামও বাইড়া গেছে। এগুলার দাম বাড়তি।
কেউ কেউ বলছেন কৃষক বলছে এভাবে চলতে থাকলে থমকে যাবে উৎপাদন। কারণ চাষাবাদের এতো খরচ বহন করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
তিনি বলেন, “আগে সারের বস্তা ছিল ৮০০ টাকা বস্তা। আর এখন হইছে ১২০০-১৩০০ টাকা বস্তা। কি দিয়ে ফসল করবো , সরকার কি মাগনা দিবে?।চাষই বাদ দেওয়ন লাগবো এখন”।
সার ও জ্বালানি তেলের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়ার কারণে কৃষিখাতে বড় ধরনের প্রভাব পড়েছে বলে মনে করছেন কৃষি অর্থনীতিবিদরা।
চীন আন্তর্জাতিক বেতারের সাথে কথা হয় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ডঃ মোহাম্মদ সাইদুর রহমানের সাথে।
“বৃষ্টিপাতের পরিমান বিগত বছরগুলোর চেয়ে এবার কম হয়েছে। এর মধ্যে সার ও তেলের দাম বৃদ্ধি , লোডশেডিংয়ের ফলে কৃষকের উপর চাপ পড়েছে। এদিকে ডিজলের কারণে তারা সাপ্লিমেন্টারি ইরিগেশন করতে পারছে না, যে কারণে তাদের উৎপাদন ব্যহত হবে। সারের দাম কমেছে, আরো কমানো হোক এরপর আমরা জোড় দিতে চাই”
বোরোর চাষের সময় সার ও তেল বেশি প্রয়োজন। সাপ্লিমেন্টারি ইরিগেশনের ক্ষেত্রে ডিজেলের ওপর নির্ভর নির্ভরতা বেশি। সাপ্লিমেন্টারি ইরিগেশনে বাধাগ্রস্ত হলে উৎপাদনে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলেও জানান এই কৃষি অর্থনীতিবিদ।
তিনি বলেন, “বোরোর ৭০% ই সেচ পাম্প ডিজেজ অপারেটেড। তাই ডিজেলের দাম শুধু পাঁচ টাকা না, আরো কমুক। সরকারকে ডিজেলের ক্ষেত্রে ভর্তুকী দেওয়া উচিত”।
সম্পাদনা – সাজিদ রাজু