প্রথমবারের মতো ঢাকা-কুয়াংচৌ রুটে বিমানের ফ্লাইট
সাজিদ রাজু, ঢাকা: প্রথমবারের চীনের সঙ্গে যাত্রীবাহী ফ্লাইট চলাচল পরিচালনা শুরু করলো বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। বৃহস্পতিবার ২২৯জন যাত্রী নিয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর থেকে চীনের কুয়াংচৌ বিমান বন্দরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় বিমানের প্রথম ফ্লাইট। এর ফলে বাংলাদেশী শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীদের চীনের সঙ্গে যোগাযোগের সমস্যার সমাধান হবে বলে মনে করেন বাংলাদেশের বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী। আপাতত মাসে একটা ফ্লাইট চললেও সামনের দিনগুলোতে রুট ও ফ্লাইট বাড়ানোর আশ্বাস দেন তিনি।
কোভিডে বন্ধ ছিলো যোগাযোগ, বন্ধ ছিলো স্বজনদের সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ। তাই বিমানবন্দরে বসেও দীর্ঘ প্রতীক্ষার ছাপ প্রতিটি যাত্রীর চোখেমুখে।
অবশেষে বৃহস্পতিবার শেষ হয় অপেক্ষার পালা। গেল ২৫ জুলাই চীনের সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন পাওয়ার পর শুরু হলো কুয়াংচৌ-ঢাকা সরাসরি বিমান চলাচল। দীর্ঘ দিন দেশে ফেরার সুযাগ পেয়ে খুশি এই ফ্লাইটের যাত্রীরা।
“আমার খুবই ভালো লাগছে। কারণ, আমি আমার বোন ও পরিবারের কাছে ফিরতে পারছি। আশা করি তাদের সঙ্গে আনন্দ সময় কাটাতে পারবো। করোনার কারণে বহুদিন তাদেরকে কাছে পাইনি, এখানে থাকতে হয়েছে। কাজেই মনে হয় এই ফ্লাইটটি আমাদের খুবই কাজে আসছে।“
চীনের সঙ্গে আগে কার্গো ফ্লাইট চলাচল করলেও, এবারই প্রথম যাত্রী পরিবহন শুরু করলো বিমান। যাত্রীরা বলছেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় যে দুয়েকটি এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট চলাচল করেছে তা ছিলো অনেক ব্যয়বহুল। বর্তমানে বিমানসহ বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট চলাচল শুরুর পর কমেছে টিকিটের দামও।
চীনা নাগরিক ও বিমানের প্রথম ফ্লাইটের যাত্রী
“আমরা শানতোং প্রদেশের বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কোম্পানি থেকে এখানে এসেছি। বাংলাদেশেও আমরা বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে কাজ করছি। আজ আমরা বাড়ি ফিরছি, খুব ভালো লাগছে।“
ঢাকা থেকে চীনের কুয়াংচৌ বিমান বন্দর পর্যন্ত সরাসরি এই ফ্লাইট চলাচল উদ্বোধন উপলক্ষে বিমানবন্দরে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়।
অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ঢাকা-কুয়াংচৌ ফ্লাইট চালুর ফলে বাংলাদেশের শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীদের চীনে যাতায়াতের সমস্যা দূর হবে। করোনা পরিস্থিতি এখনো পুরোপুরি স্বাভাবিক না হওয়ায় কিছু বাধা আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ফ্লাইটের সংখ্যা আরো বাড়বে, বাড়ানো হবে রুটের সংখ্যাও।
মোঃ মাহবুব আলী, প্রতিমন্ত্রী, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়
“বাংলাদেশের যে ব্যবসা-বাণিজ্য চীনের সঙ্গে, বেশি সংখ্যক ব্যবসায়ী কুয়াংচৌতে যাওয়া আসা করে। চীনের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। কুয়াংচৌ ছাড়াও অন্যান্য শহরেও আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্যের উভয় দেশেরই লোকজনের যাতায়াত আছে। আমাদের বিভিন্ন এলাকায় অনেক চীনা শিল্প কারখানা আছে, বড় বড় শিল্প কারখানা। সেখানে চীনা বিপুল সংখ্যক লোক কাজ করে। সুতরাং আজকের ফ্লাইট যোগাযোগের ক্ষেত্রে এক ভিন্ন মাত্রা যোগ করবে।“
বৃহস্পতিবার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করে বিমানের প্রথম ফ্লাইট। সকাল ১১ টায় ২২৯ জন যাত্রী নিয়ে ছেড়ে যায় উড্ডয়ন করে ফ্লাইট বিজি-৩৬৬। বিমানের পক্ষ থেকে বলা হয়, প্রতিমাসের শেষ বৃহস্পতিবার ঢাকা থেকে চীনের কুয়াংচৌ এর উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট।