বাংলা

যেভাবে বিশ্ব বাণিজ্যের কেন্দ্র হলো সাংহাই

CMGPublished: 2022-08-04 19:30:11
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

সাজিদ রাজু, চীন আন্তর্জাতিক বেতার: চীনের আধুনিক সুযোগ সুবিধা আর মনোরম নগর জীবনের আকর্ষণীয় শহর সাংহাই। বিখ্যাত ইয়াংসি নদীর অববাহিকার এ শহরটি গেল এক দশকের ধারাবাহিক ও পরিকল্পিত উন্নয়নের ফলে পরিণত হয়েছে বিশ্ব বাণিজ্যের কেন্দ্রবিন্দুতে। কেবল চোখধাঁধানো আকাশ ছোঁয়া স্থাপনাই নয়, প্রাকৃতিক নির্মল পরিবেশ ও বিশ্ব মানের নাগরিক সুবিধা সাংহাইকে করেছে আন্তর্জাতিক পর্যটনের নগরীতে।

ইয়াংসি নদীর তীর ঘেষে দাঁড়িয়ে আছে আকাশ ছোঁয়া সব ভবন। দাঁড়িয়ে আছে নান্দনিক সৌন্দর্যের পসরা সাজিয়ে। আবার হাল ফ্যাশন ও রুচির সব ধরনের অনুসঙ্গ মিলবে হাতের নাগালে। অত্যাধুনিক সব সুযোগ সুবিধার বিশাল সমারোহ পাওয়া যাবে যখন খুশি তখন।

নিখুঁত পরিকল্পনা আর এক দশকের নির্মাণ শেষে এমনই আন্তর্জাতিক মানের আধুনিক ও সেরা মেট্রোপলিটন শহরে পরিণত হয়েছে শহরটি। বলছি চীনের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক শহর সাংহাইয়ের কথা।

সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে পরিকল্পিত উন্নয়নের ফলে মানুষের জীবনমান হয়েছে উন্নত। আবার টেকসই উন্নয়নের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে পরিবেশ সুরক্ষার পদক্ষেপ। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে সাংহাইতে পার্কের সংখ্যা ৫শ’ থেকে বাড়িয়ে ২০২৫ সালের মধ্যে করা হবে ১ হাজার। নদীকে সংরক্ষণ করা হয়েছে প্রকৃতির কথা বিবেচনা করে। ফলে এখানকার বাসিন্দারা পেয়েছে পরিচ্ছন্ন জীবনের নিশ্চয়তা।

তেং সিনশেং, সাংহাইয়ের বাসিন্দা

< সাংহাইয়ের বহু পরিবর্তন হয়েছে। আমি এখানে প্রতিদিনই ভোরে হাটতে আসি। এই নদীর পাড়ে কোন বাজে গন্ধ নেই, পানি খুব স্বচ্ছ, গাছগুলো খুব গোছালো এবং নদীর পাড় ঘেঁষে গড়ে উঠেছে খুবই পরিকল্পিত ভবন। একইসঙ্গে এটি আমাদের শরীরচর্চা করা, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ এবং উন্নত জীবন যাপনের সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। >

মূলত এই শহর আধুনিক করার কাজ শুরু হয় ২০১২ সালে প্রেসিডেন্ট সি চিনপিংয়ের সফরের পর। সাংহাই সফর করে এই এলাকার পরিকল্পিত উন্নয়নের নির্দেশ দেন চীনা প্রেসিডেন্ট।

ভক্সপপ: ছেন জিমিং, সাংহাইয়ের বাসিন্দা

< এই ছবিতে দেখুন, টিভি ও সোফাটার পাশে কেবল একটি বিছানা ছিলো। পুরো বাড়িটিতে কেবল একটিই ঘর ছিলো। কিন্তু এখন আমাদের বসবাসের পরিবেশ উন্নত হয়েছে। আমরা খুব ভালো আছি।>

সি চিনপিং তার নির্দেশনা গুরুত্ব দেন বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন, উচ্চ প্রযুক্তি নির্ভর শিল্প কারখানা স্থাপন ও বৈশ্বিক যোগাযোগের উপর। তারপরই শুরু হয় নির্মাণযজ্ঞ।

সময়ের আবর্তনে আধুনিক শপিংমল, খেলার মাঠ, কী নেই এখানে? আবার আধুনিকতার ছোঁয়ায় নান্দনিক সৌন্দর্য্যের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে সাংহাই। আকর্ষণ করেছে দেশ বিদেশের বিনিয়োগকারী, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান। কর্পোরেট দুনিয়ার রাজধানী হয়ে উঠেছে সাংহাই। ফলে আন্তর্জাতিক ৮৪৮টি প্রতিষ্ঠান তাদের আঞ্চলিক হেডকোয়ার্টার্স স্থাপন করেছে সাংহাইতে। ৫১২টি বিদেশী বিনিয়োগের গবেষণা প্রতিষ্ঠান কার্যক্রম চালাচ্ছে এই সাংহাই শহরে। অথচ গেল এক দশক আগেও এ সংখ্যা ছিলো অর্ধেকেরও কম।

সট: পুরুষ

ওয়াং তোং, পরিচালক, সাংহাই ইনভেস্টমেন্ট প্রমোশন প্ল্যাটফর্ম

< প্রেসিডেন্ট সি চিনপিংয়ের নির্দেশনা ছিলো, সবগুলো খাত ধরে ধরে উন্নয়ন করতে হবে, আমরা তাই করেছি। ফলে উচ্চ পর্যায়ের যতো প্রতিষ্ঠান আছে বিশেষ করে শিপিং কোম্পানি, ডেটা বিশ্লেষণ সম্পর্কিত প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের হেডকোয়ার্টার্স তৈরি করতে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা আমরা দেই। এর পাশাপাশি সারা বিশ্বের আন্তর্জাতিক শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর চেইন কার্যক্রম যেমন সাপ্লাই চেইন, ভ্যালু চেইনের সুযোগ এখানে আছে। এসব উদ্যোগের ফলে সমাজতান্ত্রিক বৈশিষ্ট্যের এবং বিশ্বে প্রভাব সৃষ্টিকারী একটি আন্তর্জাতিক মেট্রোপলিটন শহরে পরিণত হয়েছে সাংহাই। >

আপস…

শুধু তাই নয়, ওষুধ নির্মাণ শিল্প, গবেষনা ও উন্নয়ন বিষয়ক রোবট নির্মাণ প্রতিষ্ঠান, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠান কিংবা বায়োমেডিকেল খাতে আসছে বিনিয়োগ। এখানে আসছে গাড়ি নির্মাণ শিল্প, ফ্যাশন পণ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান কার্যক্রম চালাচ্ছে একেবারে শুরু থেকেই। সারা বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা করতে নির্মাণ করা হয়েছে সর্বাধুনিক বিমান বন্দর।

পরিসংখ্যান বলছে, ২০২১ সালের শেষ নাগাদ এই শহরে নিবন্ধিত আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিলো ১৭শ’। এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ৩৭০ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের লেনদেন হয়েছে সে বছর। আর একইবছর শিল্প খাতে মূল্য সংযোজনের পরিমাণ প্রথম বারের মতো ১ ট্রিলিয়ন ছাড়িয়ে যায়। ফলে সাংহাই এরই মধ্যে পরিণত হয়েছে আন্তজাতিক বাণিজ্যের অন্যতম কেন্দ্র হিসেবে।

পে-অফ।

https://www.cctvplus.com/news/20220719/8282547.shtml#!language=1

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn