উন্নতজাত ও প্রযুক্তির সমন্বয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছে সিনচিয়াংয়ের কৃষিখামার
সাজিদ রাজু, চীন আন্তর্জাতিক বেতার: পশু পালন ও প্রজনন শিল্পের উপর ভর করে সমৃদ্ধি এসেছে চীনের উইগুর স্বায়ত্বশাসিত অঞ্চল সিনচিয়াংয়ে। তবে প্রচলিত পদ্ধতির খামার নয় বরং বিদেশী উন্নত জাত ও প্রযুক্তির ব্যবহারে পুরো অঞ্চলের অর্থনৈতিক কার্যক্রমে এসেছে স্বচ্ছলতার ছোঁয়া।
চীনের উত্তর-পশ্চিমের উইগুর স্বায়ত্বশাসিত অঞ্চল সিনচিয়াং এর মাটি যেন উর্বর বৈচিত্রে ভরা। এখানকার জলবায়ু, পরিবেশ আর পরিশ্রমী মানুষের সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে এক উৎপাদন কেন্দ্র। তারই নজির মিলবে সিনচিয়াং এর আকসু এলাকায়।
তিয়ানশান পর্বতে ঘেরা কুছা কাউন্টির খামারগুলোতে ঢুকলেই চোখ ছানাবড়া হওয়ার জোগাড়। বিশেষ করে আল্লাহাগ টাউনে গড়ে তোলা গরুর খামারগুলোতে সুদূর নিউজিল্যান্ড থেকে আনা হয়েছে বিভিন্ন জাতের গরু। স্থানীয় খামারিরা দিন ভর ব্যস্ত গরু লালন-পালনে। মাংস ও দুধ উৎপাদনের জন্য
“আল্লাহাগ শহরের এই গরুর খামারের আয়তন ২০ হেক্টরেরও বেশি। এখানকার বেশিরভাগ গরুর জাতই আনা হয়েছে সুইজারল্যান্ড থেকে। আমাদের এখানে প্রতি বছর প্রায় ৪ হাজার থেকে ৫ হাজারটি গরু লালন-পালন করতে পারি। আগামী বছর আমাদের এই খামারটি আরো বড় করবো। আরো একটি পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি, সেটা হলো আশপাশের গ্রামের বাসিন্দাদের এখানে কাজ করার সুযোগ ও প্রশিক্ষণ দেব।“
একই এলাকার আকুস্টাং শহরে আছে খরগোশের খামার। আদিল আনওয়ার, এই খামারের মালিক। তিনি বলছিলেন, শুরুতে ৮০টি খরগোশ নিয়ে কার্যক্রম শুরু করলেও এখন আছে প্রায় ৩শ’টি খরগোশ। বিশেষ করে মাংস উৎপাদনের জন্য যে খরগোশগুলো এখানে লালন-পালন করা হয় সেগুলো বেড়ে ওঠে দ্রুত আর লাভও পাওয়া যায় বেশি।
প্রতিটি খরগোশ থেকে প্রায় ৭ থেকে ৮ কেজি পর্যন্ত মাংস পাওয়া যায়। এসব মাংস বিক্রি করে আয় করা যায় প্রায় ২০০ থেকে ৩০০ ইউয়ান পর্যন্ত।
এদিকে, দিন দিনই লাভজনক হয়ে উঠছে উটপাখির চাষ। খামারে খামারে দেখা মিলবে উটপাখি। স্থানীয় উটপাখির খামারি আরজিগুল পাজিল নামের এই নারী বলছিলেন, খামার করার চিন্তা তার মাথায় আসে ইন্টারনেটে ভিডিও দেখে। শুরুতে ২০টি উটপাখি এনে খামার শুরু করেছিলেন, এখন তা ক্রমেই বাড়ছে।
আরজিগুল জানান, ৩০ দিনের মাথায় বাচ্চা উটপাখিগুলো খাওয়ার উপযোগী হয়ে ওঠে। বেশ সুস্বাদু উটপাখির চামড়া, ডিম ও মাংস। লাভের মুখ দেখায় ধীরে ধীরে বড় হয়ে উঠছে এই খামার। স্থানীয় খামারিরা বলছেন, এসব খামার করে দিন দিন অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছেন তারা।