বাংলা

চীনে মানবসেবায় দৃষ্টান্ত স্থাপন করছেন আফ্রিকান চিকিৎসক

CMGPublished: 2022-02-17 19:17:16
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

শান্তা মারিয়া, ফেব্রুয়ারি ১৭: আফ্রিকার নাগরিক হলেও চীনা চিকিৎসা পদ্ধতি প্রয়োগ করে রীতিমত সুনাম অর্জন করেছেন এক চিকিৎসক। ৩৬ বছর আগে প্রথম চীনে এসেছিলেন তিনি। এরপর নিয়েছেন চীনা ঐতিহ্যবাহী চিকিৎসার প্রশিক্ষণ। ১৯৯৮ সাল থেকে শুরু করেছেন পল্লী অঞ্চলের চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ।

ডা. ডিয়ারা বাওবাসার। চীনের সিচুয়ান প্রদেশের ছাংদু শহরে তাকে এক নামে চেনে সবাই। চীনের ঐতিহ্যবাহী চিকিৎসা পদ্ধতি অনুসরণ করে রোগী দেখেন ডা. বাওবাসার।

কেবল রোগের চিকিৎসা নয়, গ্রামাঞ্চলের মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্য সেবার পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ দেন চীনা পল্লী চিকিৎসকদেরও। তার কাছে প্রশিক্ষণ নিয়ে নানা অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েন চীনের ঐতিহ্যবাহী চীনা চিকিৎসা পদ্ধতির শিক্ষার্থীরা। তিনি জানান, চীনজুড়ে তার আছে ৫ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী।

তিনি বলেন, ‘আমার নাম ডিয়ারা বাওবাসার। আমি মালি থেকে চীনে এসেছি। আমি ছাংদুর সিনদু জেলার টিসিএম হাসপাতালের অধ্যাপক।’

চিকিৎসা ও প্রশিক্ষণের পাশাপাশি স্থানীয় বাসিন্দাদের স্বাস্থ্যসচেতন করেন ডা. ডিয়ারা। শেখান স্বাস্থ্য বিষয়ক নানা দিক। তবে স্থানীয়দের সঙ্গে যোগাযোগে কোন সমস্যা হয়না তার কারণ, তিনি বেশ ভালো বলতে পারেন চীনা ভাষা।

ডা. ডিয়ারা বলেন, ‘১৯৮৪ সালে লেখাপড়া করতে আমি চীনে আসি। গ্র্যাজুয়েশনের পর একজন টিসিএম ডাক্তার হিসেবে কাজ শুরু করি। চীনে গেল ৩৬ বছরে আমি আমার শিক্ষক ও বন্ধুদের কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছি। যা শিখেছি তা আমার ছাত্রছাত্রীদের শিখিয়েছি।’

স্বভাবে কড়া ধাঁচের হলেও শিক্ষার্থীদের কাছেও তুমুল জনপ্রিয় ডা. দিয়ারা। তাঁর একজন ছাত্র বলেন,

‘তিনি বেশ কঠিন শিক্ষক। কিন্তু আমরা তাকে পছন্দ করি। কারণ তিনি অত্যন্ত ভালো মানুষ। আমরা তার কাছ থেকে অনেক শিখেছি।’

জীবনসঙ্গী হিসেবে তিনি বেছে নিয়েছেন চীনা নাগরিককে। এরপর ১৯৯৮ সালে ইউননান প্রদেশে বসবাস শুরু করেন স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে। স্ত্রী - কন্যা ইউননান প্রদেশের কুনমিং শহরে থাকলেও তার বেশিরভাগ সময় কাটে ছাংদু শহরে এবং পল্লী এলাকায়। আর কাজের চাপে খুব বেশি সময় দেয়া হয় না স্ত্রী ও সন্তানকে।

ডা. ডিয়ারার স্ত্রী বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে আশা করি সে আমাদের সঙ্গে আরও বেশি সময় কাটাতে পারে। কিন্তু অধিকাংশ সময়ই কাজের জন্য তাকে তাড়াতাড়ি ফিরে যেতে হয়। ’

ডা. ডিয়ারা মনে প্রাণে একজন চিকিৎসক। চিকিৎসো পেশায় অতিবাহিত করছেন পুরো জীবন। কেবল শারীরিক নয় বরং মানসিকভাবেও কীভাবে ভালো থাকা যায় তা নিয়েও কাজ করছেন তিনি। অসংখ্য মানুষকে সেবা দেওয়া ও শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে জীবদ্দশাতেই মানবতার প্রতীক হয়ে উঠছেন এ চিকিৎসক।

প্রতিবেদন: শান্তা মারিয়া

সম্পাদনা: সাজিদ রাজু

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn