বাংলা

চীনের সংস্কৃতি, চীনের ঐতিহ্য-১৬

CMGPublished: 2023-05-13 17:33:10
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

মধ্য-এশিয়ার দেশগুলোতে চীনা চলচ্চিত্র, টিভি অনুষ্ঠান সম্প্রচারে ব্যাপক সাড়া

মধ্য এশিয়ার দেশগুলোতে ‘দ্য বন্ড’ বা ‘বন্ধন’ নামে প্রদর্শনী ও স্ক্রিনিং ইভেন্টটির সহ-আয়োজক চায়না মিডিয়া গ্রুপ-সিএমজি এবং কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান, তাজিকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান এবং উজবেকিস্তানের মূলধারার মিডিয়াগুলো।

সিএমজি নির্মিত সাতটি তথ্যচিত্র এবং স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র স্থানীয় ভাষায় অনুবাদ করে সম্প্রচার করা হয়েছে।

এগুলোর তিনটি- টেস্ট অফ সিনচিয়াং, স্লো ট্রেন এবং হিউম্যান কার্বন ফুটপ্রিন্ট এরই মধ্যে উজবেকিস্তান, কিরগিজস্তান এবং তাজিকিস্তানে উজবেক, রুশ এবং তাজিক ভাষায় সম্প্রচারিত হয়েছে। এ সব দেশের টেলিভিশন দর্শকরা খুব আগ্রহের সঙ্গে দেখেছেন এ সব তথ্যচিত্র ও স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র।

তাজিকিস্তানের টিভি সিনামোর উপপরিচালক মাসরুর রাজাবভ জানালেন চীনা চলচ্চিত্র ও অনুষ্ঠানগুলোর জনপ্রিয়তা সম্পর্কে।

‘চীনা চলচ্চিত্র এবং টিভি অনুষ্ঠানগুলি এখন তাজিক দর্শকদের কাছে খুব জনপ্রিয়। তিনটি সিএমজি প্রোগ্রাম আমাদের টিভি স্টেশনের অনুষ্ঠানে বৈচিত্র এনেছে। এটি তাজিকিস্তানে চীনা সংস্কৃতির বিস্তারকে সহজতর করবে এবং আমাদের দুদেশের মধ্যে সুসম্পর্ক এবং পারস্পরিক কল্যাণ বয়ে আনবে’।

কিরগিজ টেলিভিশনের সাংবাদিক শাইয়ারবেক আরাপভ জানালেন চীনকে আরও গভীরভাবে জানার আনন্দের কথা।

‘স্লো ট্রেন’ ডকুমেন্টারি দেখার পর আমি চীনা ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য সম্পর্কে আরও জেনেছি। চীনা রীতিনীতি আমার মনে গভীর ছাপ ফেলেছে। চীনা ঐতিহ্য আমাদের থেকে অনেক আলাদা, যা দেখতে আকর্ষণীয় ও আনন্দের। আমি আশা করি ভবিষ্যতে আমাদের দেশে চীনা চলচ্চিত্র এবং টিভি অনুষ্ঠান আরও দেখতে পাব’।

তাজিকিস্তানের টেলিভিশন দর্শক ভাখাবভ মানুচেহরও দারূণ উপভোগ করেছেন চীনা চলচ্চিত্র ও টিভি অনুষ্ঠান।

‘আমি চীনা সংস্কৃতি সম্পর্কে- খাবার থেকে শুরু করে রীতিনীতি এবং ঐতিহ্যের বিভিন্ন অনুষ্ঠান দেখতে সত্যিই উপভোগ করি। এটি আমাকে চীন সম্পর্কে গভীরভাবে বুঝতে সাহায্য করে যেটি সমৃদ্ধ সম্পদ, বিশাল পাহাড় এবং সুন্দর নদীসহ একটি বিশাল দেশ’।

কাজাখস্তান এবং তুর্কমেনিস্তান মে মাস জুড়ে সম্প্রচার করা হবে এ সব চলচ্চিত্র ও টিভি অনুষ্ঠান।

এর আগে আফ্রিকা এবং ল্যাটিন আমেরিকাসহ বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন দেশের স্থানীয় মিডিয়ায় ১০০টি দেশ কিংবা ভাষায় সম্প্রচার হয়েছে সিএমজি নির্মিত অনুষ্ঠান।

২. সিনচিয়াংয়ের উইগুরদের পরিবেশনায় মুগ্ধ শেনচেন

সৌন্দর্যের লীলাভূমি উত্তর-পশ্চিম চীনের সিনচিয়াং উইগুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল। আর এই সুন্দর অঞ্চলের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির প্রচার ও প্রসার ঘটাতে ‘সিনচিয়াং একটি ভালো জায়গা’ শিরোনামে দক্ষিণের শহর শেনচেনে বর্ণাঢ্য এক আয়োজন করা হয়। এর মাধ্যমে শুধু সংস্কৃতি নয়, এই অঞ্চলের সামাজিক এবং অর্থনৈতিক অর্জনগুলোও প্রদর্শন করা হয়।

উত্তর-পশ্চিম চীনের সিনচিয়াং উইগুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের শৈল্পিক এবং সাংস্কৃতিক ভাণ্ডারকে তুলে ধরে বাদ্যযন্ত্রের তালে তালে নৃত্য পরিবেশন করে কয়েকটি দল।

বৈচিত্র্যপূর্ণ শো’তে একাধিক পারফর্মিং আর্ট ফর্মের সমৃদ্ধ সমন্বয় স্থানীয় শাস্ত্রীয় লোকগীতি এবং নাচ পরিবেশন করা হয়। সেইসঙ্গে অন্যান্য উত্সাহী যন্ত্র পরিবেশন এবং ছোট মঞ্চ নাটকের একটি সিরিজও অন্তর্ভুক্ত ছিলো।

উদ্যমী এবং আকর্ষণী এমন শো দেশের পর্যটকদের পাশাপাশি বিদেশ থেকে আসা পর্যটকদের উপরও একটি গভীর প্রভাব ফেলেছে। একজন বিদেশি পর্যটক যেমন বলছিলেন:

‘আমি অনেক ভ্রমণ করেছি এবং আমি সারা বিশ্বে ঘুরেছি। এই পারফরম্যান্সটি আমার পুরো জীবনে দেখা সবচেয়ে অনন্য এবং বিশেষ পারফরম্যান্সগুলোর মধ্যে একটি মনে হয়েছে’।

সিনচিয়াংয়ের স্বাতন্ত্র্যসূচক সংস্কৃতি প্রদর্শন করে এবং এ অঞ্চলে বসবাসকারী সমস্ত জাতিগত গোষ্ঠীর লোকদের জীবন ও রীতিনীতি ভাগ করে নেওয়ার মাধ্যমে, সারা বিশ্বের মানুষকে সিনচিয়াংয় ভ্রমণ করতে এবং এ অঞ্চলের অভিজ্ঞতা নিতে উৎসাহিত করবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তা।

৩. বিদেশি ভাষায় চীনা বই প্রকাশ হলে চীনের প্রতি বিশ্বের মানুষের শ্রদ্ধা-ভালোবাসা বাড়বে: অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ

গত ৪ মে রাজধানী ঢাকার বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে হয়ে গেল ‘সিএমজির নতুন অগ্রযাত্রা: চীনা বই প্রকাশ’ শীর্ষক এক ব্যতিক্রমী গোলটেবিল বৈঠক। চীন বিষয়ে বইয়ের লেখক ও প্রকাশকদের নিয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনের সাংস্কৃতি কাউন্সিলর ইয়াও ওয়েন, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মুহম্মদ নুরুল হুদা ও বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ। বেইজিং থেকে অনলাইনে যুক্ত হন সিএমজি বাংলা বিভাগের পরিচালক ইউ কুয়াং ইউয়ে আনন্দি।

অনুষ্ঠানে অন্য অতিথি ও আলোচকদের পাশাপাশি বিদেশি ভাষায় কোনো দেশের শ্রেষ্ঠ বই প্রকাশের গুরুত্ব তুলে ধরেন আলোকিত মানুষ গড়ার কারিগর অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ।

চীন যদি তার শ্রেষ্ঠ বইগুলো অন্যভাষায় প্রকাশ করলে তবে চীনের প্রতিও বিশ্বের অন্য দেশের মানুষের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা বাড়বে বলে মনে করেন বাংলাদেশের বরেণ্য এ শিক্ষাবিদ।

তবে, অনুবাদের ক্ষেত্রে সমস্যার কথা তুলে ধরে পরিত্রাণের পথও বাতলে দেন অধ্যাপক সায়ীদ।

চীনের মতো বড় একটি দেশের পক্ষে এটি কঠিন কাজ নয় বলে মনে করেন তিনি।

শিল্প-সাহিত্য সংস্কৃতির জগতে পাশ্চাত্য নির্ভরতা কাটিয়ে উঠতে বাংলাদেশে চীনের সাংস্কৃতিক কেন্দ্র প্রতিষ্ঠারও পরামর্শ দেন অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ।

------------------------------------------------------------------------------

প্রতিবেদন ও কণ্ঠ: রওজায়ে জাবিদা ঐশী, মাহমুদ হাশিম

অডিও সম্পাদনা: হোসনে মোবারক সৌরভ, রফিক বিপুল

প্রযোজনা ও উপস্থাপনা: মাহমুদ হাশিম

সার্বিক তত্ত্বাবধানে: ইউ কুয়াং ইউয়ে আনন্দী।

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn