বাংলা

চীনের সংস্কৃতি, চীনের ঐতিহ্য-৪

CMGPublished: 2023-02-18 19:03:51
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

চীনের ঐতিহ্যবাহী সিএমজি লণ্ঠন ফেস্টিভ্যাল গালার রেকর্ড

চমৎকার নান্দনিক উপস্থাপনায় সিএমজি ল্যান্টার্ন ফেস্টিভ্যাল গালা মঞ্চস্থ হয়েছে। ৫ ফেব্রুয়ারি রাতে চায়না মিডিয়া গ্রুপ এ অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচার করে। ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক উপাদান সমন্বিত বর্ণিল পরিবেশনা মুগ্ধ করে দেশ বিদেশের দর্শকদের। অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার অনুষ্ঠানের মানকে আরো সমৃদ্ধ করেছে। এদিকে, সর্বোচ্চ সংখ্যক দর্শক দেখা অনুষ্ঠান হিসেবে সিএমজি লণ্ঠন ফেস্টিভ্যাল গালা রেকর্ড গড়েছে।

চায়না মিডিয়া গ্রুপ সিএমজির এ আয়োজনটিতে ভিডিও, লাইটিং, লিফটিং স্টেজ এবং লাইভ সাউন্ড রিইনফোর্সমেন্ট সম্পূর্ণরূপে সেন্ট্রালাইজড কন্ট্রোলের মাধ্যমে শৈল্পিক নন্দনতত্ত্বের মিশেলে ভিজ্যুয়াল এবং সাউন্ড ইফেক্টকে উল্লেখযোগ্যভাবে তুলে ধরা হয়েছে।

এবারের অনুষ্ঠানে চীনের ঐতিহ্যিক সাংস্কৃতিক উপস্থাপনার অন্যতম দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আনা বিভিন্ন ধরনের লণ্ঠন- যা চীনের লোক-কারুশিল্পের ঐতিহ্য বহন করে।

চীনের গণমুক্তি ফৌজের অনার গার্ড ব্যাটালিয়ন এ বছর প্রথমবারের মতো গালায় অংশগ্রহণ করেছে এবং দুর্দান্ত কোরাস ও নতুন যুগে সৈন্যদের শৈলী প্রদর্শন করেছে।

অনুষ্ঠানের আরেকটি হাইলাইট হিসেবে, চীনা শৈল্পিক জিমন্যাস্টিক দল সৌন্দর্য এবং শক্তির মধ্যে অপূর্ব একতা প্রদর্শন করে, যার মাধ্যমে চীনা জিমন্যাস্টদের সম্মান প্রদর্শন করা হয়।

"স্লো, স্লো টিউন" নামের একটি গানের মাধ্যমে শুভ কামনা জানানো হয়। "এ নাইট উইথ ব্লুমিং ফ্লাওয়ারস " নামে একটি লোকশিল্প মিশ্রিত পারফরম্যান্স দেখানো হয়।

মঞ্চটিকে দাবাবোর্ড হিসেবে ব্যবহার করে অত্যাশ্চর্য অ্যাক্রোবেটিক দক্ষতার সাথে চীনা দাবা সংস্কৃতিকে একত্রিত করেছে "দাবা খেলা"। এটি প্রাচ্যের নন্দনতত্ত্বের একটি শৈল্পিক দৃশ্য তৈরি করে।

২০২৩ সালের ল্যান্টার্ন ফেস্টিভ্যাল গালার সবচেয়ে আকর্ষণীয় পারফরম্যান্সের মধ্যে একটি হল ঐতিহ্যবাহী চীনা অপেরা "ভিউ ল্যান্টার্নস"। পারফরম্যান্সটি লণ্ঠন উৎসবের সময় একটি পুনর্মিলনের দৃশ্য চিত্রিত করে। অপেরা শিল্পীদের গানের মতোই, এটি হাজার হাজার বছর ধরে চলে এসেছে।

লণ্ঠন দেখা এবং লণ্ঠনের ধাঁধা অনুমান করা লণ্ঠন উৎসব উদযাপনের একটি অপরিহার্য অংশ।

এদিকে, সিএমজির ২০২৩ সালের লণ্ঠন ফেস্টিভ্যাল গালা রেকর্ড সংখ্যক দর্শক দেখেছেন বলে জানা গেছে। এই গ্র্যান্ড গালা বিদেশেও দর্শকদের মনোযোগ আকর্ষণ করেছে। সিএমজি এটিকে ৬৮টি ভাষায় বিশ্বব্যাপী দর্শকদের কাছে সম্প্রচার করেছে। বিদেশী সামাজিক প্ল্যাটফর্মে সরাসরি সম্প্রচার ১০.৭ মিলিয়ন ভিউ ছাড়িয়েছে।

চিরায়ত চীনা সাহিত্য

কবি লিউ চুং ইউয়ান: চীনা গদ্যসাহিত্যে নতুন ধারার স্রষ্টা

প্রাচীন ও মধ্যযুগের চীনে কবিতার পাশাপাশি গদ্য সাহিত্যও বিকশিত হয়। থাং এবং সুং রাজবংশের সময়কার আটজন সেরা গদ্য-লেখকের অন্যতম হলেন লিউ চুং ইউয়ান। তিনি ছিলেন একাধারে কবি, গদ্যলেখক, রাজনীতিবিদ এবং দার্শনিক। ৭৭৩ সালে তার জন্ম বর্তমান শানসি প্রদেশের ইয়ংচি শহরে।

লিউ চুং ইউয়ানের শিক্ষাদীক্ষা ছিল উন্নত মানের। তিনি ভালো গদ্য এবং কবিতা লিখতেন। তরুণ বয়সে সে সময়ের সব মেধাবী মানুষের মতোই রাজদরবারে সরকারি চাকরির পরীক্ষায় ভালো ফলাফলের মাধ্যমে সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে পেশাজীবন শুরু করেন। বেশ উন্নতিও করছিলেন তিনি। কিন্তু একটি সংস্কার আন্দোলনে জড়িত হয়ে বড় ভুল করেন। আন্দোলনটি ব্যর্থ হয় আর লিউ অবধারিতভাবে সম্রাটের বিরাগভাজন হন।

প্রথমে হুনানের ইয়ংচৌ শহরে এবং পরে কুয়াংসির লিউচৌ শহরে তাকে নির্বাসনে পাঠানো হয়। একসময় তিনি লিউচৌ শহরের গভর্নর হন। নির্বাসনে থাকার ফলে তার লেখালেখি গতি পায়। তিনি কবিতা, গল্প, ভ্রমণগদ্য এবং রচনা লেখেন। কনফুসিয়াসের দর্শন, বৌদ্ধ ও তাও দর্শন বিষয়ে তিনি লেখালেখি করে খ্যাতি পান।

৮১৯ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তার গদ্য রচনা চীনের চিরায়ত গদ্য সাহিত্যে নতুন ধারার সৃষ্টি করে।

তার একটি বিখ্যাত কবিতা হলো চিয়াংসুয়ে যার অর্থ তুষার নদী। এটিকে শীতের তুষার নামেও অভিহিত করা যায়। কবিতাটি বলছি।

কবিতার শিরোনাম তুষার নদী

শত শত পর্বত, পাখির ডানার চিহ্নমাত্র নেই

শত সহস্র পথ, নেই কোনো পথিকের ছায়া

নিঃসঙ্গ নৌকায় এক বৃদ্ধ মানুষ, মাথায় তার খড়ের টুপি ও বর্ষাতি

একা মাছ ধরছেন হিমশীতল নদীতে।

লিউ চুংইউয়ানের এই কবিতা পরবর্তীকালের চীনা সাহিত্যে বেশ প্রভাব বিস্তার করে। এই কবিতার বিষয়বস্তুকে ভিত্তি করে আঁকা হয় অনেক পেইন্টিং।

গভীর জীবন দর্শন ও স্বচ্ছ বাকভঙ্গিমার জন্য লিউ চুংইউয়ান চিরায়ত চীনা সাহিত্যে এক বিশিষ্ট স্থান অধিকার করেছেন।

কবিতা অনুবাদ: শান্তা মারিয়া।

----------------------------------------------------------------------

চীনের সংস্কৃতি চীনের ঐতিহ্য

প্রতিবেদন: রওজায়ে জাবিদা ঐশী, শান্তা মারিয়া

অডিও সম্পাদনা: হোসনে মোবারক সৌরভ, রফিক বিপুল

প্রযোজনা ও উপস্থাপনা: মাহমুদ হাশিম।

সার্বিক তত্ত্বাবধানে: ইউ কুয়াং ইউয়ে আনন্দী।

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn