বাংলা

‘তারুণ্যের অগ্রযাত্রা’ পর্ব ৩

CMGPublished: 2023-02-01 20:03:07
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

‘তারুণ্যের অগযাত্রা’ অনুষ্ঠানে স্বাগত জানাচ্ছি আমি রওজায়ে জাবিদা ঐশী। দেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নেওয়ার প্রধান হাতিয়ার তারুণ্য। তরুণরা চাইলেই পারে সমাজকে বদলে দিতে। এজন্য দরকার তাদের চিন্তা ও মেধার সমন্বয়। চীন ও বাংলাদেশের তরুণদের অফুরান সম্ভাবনার কথা তুলে ধরবো এই অনুষ্ঠানে। তরুণদের সৃজনশীলতার গল্পগাঁথা নিয়েই সাজানো হয়েছে আমাদের তারুণের অগ্রযাত্রা।

১.

সাক্ষাৎকার

‘তারুণ্যে মূল লক্ষ্য হওয়া উচিৎ সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া। আর সামনের দিকে এগুতে হলে জ্ঞান পিপাসা বাড়াতে হবে এবং ভালো কাজের সুযোগ সন্ধানী হতে হবে বলে মনে করেন ডা. নাজমুস সাকিব।

ডা. নাজমুস সাকিব। বর্তমানে তিনি চীনের পিকিং ইউনিভার্সিটি ফার্স্ট হসপিটালে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ হিসেবে কর্মরত আছেন। পাশাপাশি এশিয়ান সোসাইটি অফ কার্ডিওলজির একজন সদস্য তিনি। বাংলাদেশ চীন ইয়ুথ স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের নির্দেশক হিসেবে কাজ করছেন তিনি।

ডা. নাজমুস সাকিবকে আমরা তারুণ্যের অগ্রযাত্রায় আমন্ত্রণ জানিয়েছি। তিনি অনলাইনে আমাদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে তার পথচলা, অভিজ্ঞতা ও চিন্তা ভাবনা শেয়ার করেছেন।

২.

গানে গানে চীনা সংস্কৃতিকে ছড়িয়ে দিচ্ছেন চীনে অধ্যনরত চার বিদেশি শিক্ষার্থী। আফ্রিকান ও চীনা সঙ্গীতের মিশেলে এক অনন্য সৃষ্টি তাদের গান। আধুনিক চীনের অর্জন, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য নিয়ে তাদের গান এখন সমাদৃত হচ্ছে পুরো বিশ্বজুড়ে।

ব্যান্ড সঙ্গীতের মাধ্যমে পুরো বিশ্বের দরবারে চীনকে তুলে ধরছে ভিন্ন ভিন্ন দেশের চার তরুণ শিক্ষার্থী। যদিও তাদের গান অধিকাংশই ইংরেজীতে গাওয়া, তবে চীনের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও উন্নয়ন হলো তাদের গানের মূল বিষয়বস্তু।

ব্যান্ডটির সকল সদস্যই চীনের বিভিন্ন প্রদেশে বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত আছেন। ব্যান্ড সদস্য ড্যানিয়েল রুকিকো বাজান কি-বোর্ড, বেজ দেখেন আবেল জ্যাকব ছুলু , ড্রাম বাজান নিয়াশা চিকোমো এবং ভোকাল দেন অদ্রে তানাকা মুরুনগেনি।

ব্যান্ড গঠন তাদের কাছে শুধুমাত্র একটি শখের বিষয় নয়। তারা চান তাদের গানের মাধ্যমে যেনো চীন সম্পর্কে বিশ্ববাসীর মধ্যে আরো গভীর উপলব্ধি তৈরি হয়।

ব্যান্ডটির বানানো মৌলিক গান ‘টেক ইউ টু নো গ্রেট চায়না’য় তারা, তাদের চোখে আধুনিক চীনকে ফুটিয়ে তুলেছে। চীনা এবং ইংরেজী উভয় ভাষাতেই এই গান গেয়েছে তারা। ব্যান্ডটির এক সদস্য ড্যানিয়েল রুকিকো বলেন চীনের অগ্রযাত্রাকে ফুটিয়ে তোলাই ছিলো এই গানের মূল উদ্দেশ্য।

‘আমরা চীনের অগ্রযাত্রাকে এই গানের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলতে চেষ্টা করেছি। এই গান শুনে আমার নিজ দেশের এক বন্ধু আমাকে বলেছে, বাহ, গানটি খুবই সুন্দর এবং অনুপ্রেরণাময়। কঠোর পরিশ্রম করলে আমরাও চীনাদের মতো আধুনিক জাতি হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো।‘

ড্যানিয়েল চীনে এসেছেন ২০১৫ সালে। বর্তমানে সে বিশ্ববিদ্যালয়ে এরোন্যাটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতকোত্তর করছেন। ড্যানিয়েল, আফ্রিকান সঙ্গীত ও চীনা সংস্কৃতির মিশেলে নতুন ঘরানার সঙ্গীত সৃষ্টিতে বেশ পটু।

ড্যানিয়েল রুকিকো

‘অধিকাংশ চীনা গানেরই অনেক গভীর মর্ম রয়েছে। আর আমার দেশের ঐতিহ্যবাহী গানগুলোতে থাকে নাচ, জোরালো ড্রামের বিট এবং সামান্য গান। আমাদের সঙ্গীতে নাচই বেশি, গান তুলনামূলক কম। তাই আমি মনে করি আমরা যখন চীনা ও আফ্রিকান সঙ্গীতের এই দুই বৈশিষ্ট্যকে সমন্বয় করে নতুন কোনো গান বানাই তখন তা চীনা ও বিদেশি শ্রোতা, উভয়ের কাছেই গ্রহযোগ্যতা পায়।‘

তাদের গান শুধু চীনেই না, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কল্যাণে জনপ্রিয়তা পেয়েছে বিশ্বজুড়ে।

প্রতিবেদকঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন

৩.

কাগজ-কাটা শিল্পকর্মের চমৎকার কারিগর শি ছিনলিং। সাংহাইয়ের কাগজ-কাটা শিল্পের একজন তরুণ উত্তরাধিকারী তিনি। এক যুগেরও বেশি সময় ধরে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে বাঁচিয়ে রাখতে তার আবেগ এবং উদ্ভাবন ব্যবহার করছেন শি ছিনলিং৷

চীনে যেকোনো উৎসব উদযাপনে নতুন দীপ্তি যোগ করে কাগজ-কাটা শিল্পকর্ম। আর এই কাগজ-কাটা শিল্পকর্মের চমৎকার তরুণ কারিগর শি ছিনলিং। ১৩ বছর ধরে এই ক্ষেত্রে কাজ করার পর শি-কে সাংহাইয়ের পেপার-কাটিং উত্তরাধিকারী হিসাবে উপাধি দেওয়া হয়েছে। তিনি কাগজ-কাটা ঐতিহ্যের শহরের সর্বকনিষ্ঠ উত্তরাধিকারী।

সাংহাই পেপার কাটিংয়ের উত্তরাধিকারী হিসাবে শি এটি শেখায় আরও বেশি লোককে আকৃষ্ট করতে ইভেন্টে যোগ দেন। তিনি শিশুদের নিয়েও কাজ করছেন। তাদেরকে শিল্প প্রচার করতে শেখাচ্ছেন। তাছাড়া তিনি তরুণদেরকে এই শিল্পের প্রতি আকৃষ্ট করছেন।

কাঁচি দিয়ে কেটেও যে গল্প বলা যায়, অনুভূতি প্রকাশ করা যায় তা তিনি এই শিল্পের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করছেন এবং দক্ষতা অর্জন করছেন। কোনো লাইন না টেনে এই শিল্পী পাঁচ মিনিটেই একটি প্রাণীর নকশা তৈরি করতে পারেন। তিনি বলেন, শৈশবে হস্তশিল্পের প্রতি আগ্রহী হওয়ার পর কাগজ কাটা ধীরে ধীরে তার নেশায় পরিণত হয়। তিনি যখন প্রথম শুরু করেন, তখন কাজটিকে পেশা হিসেবে নেওয়া সহজ ছিল না বলে জানান তিনি।

কাগজ কাটার জন্য আপনাকে মনোযোগ দিতে হবে । আমি ধীরে ধীরে এই শিল্পের প্রেমে পড়েছি। আমি দৈনন্দিন জীবনের মুহূর্তগুলো থেকে অনুপ্রাণিত হয়েছি। প্রাণী, গাছপালা -- আমি যা দেখি তাই তৈরি করার চেষ্টা করি। আমি মনে করি, যেকোনো সাফল্যের আগে ব্যর্থ হওয়াটা প্রয়োজন। যেকোনো অর্জনে এটি খুব দরকারি।

কাগজ কাটা চীনের প্রাচীনতম ও জনপ্রিয় লোকশিল্পগুলোর একটি। এতে লাল কাগজকে সবসময় প্রাধান্য দেওয়া হয়। বিভিন্ন আকৃতিতে কাঁচি বা এই জাতীয় উপকরণ দিয়ে কাগজ কাটা হয়ে থাকে। মূলত চীনা নববর্ষে শুভকামনা জানাতে অথবা নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে শুভ ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে রঙিন কাগজ কেটে সাজানো হয়ে থাকে। কাগজ-কাটা শিল্পকর্ম প্রায়ই ঘরবাড়ি সাজাতে ব্যবহার করা হয়। এগুলো ভাগ্য ও সুখের প্রতীক বলে বিশ্বাস করা হয় ।

প্রতিবেদকঃ রওজায়ে জাবিদা ঐশী

আমাদের ‘তারুণ্যের অগযাত্রা’ আজ এই পর্যন্তই । পরবর্তী অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ জানিয়ে আপনাদের কাছ থেকে বিদায় নিচ্ছি আমি রওজায়ে জাবিদা ঐশী। সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। শুভকামনা সবার জন্য।

পরিকল্পনা ,পরিচালনা ও সঞ্চালনা : রওজায়ে জাবিদা ঐশী

অডিও সম্পাদনা: রফিক বিপুল

সার্বিক সম্পাদনা: ইয়ু কুয়াং ইউয়ে আনন্দী

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn