চিরায়ত চীনা সাহিত্য: গীতিধর্মী কাব্যের কবি পাই চু ই
চীনের থাং রাজবংশের সময়ের কবিতাকে বলা হয় থাংশি। শি মানে কবিতা। থাং রাজবংশের সময় চীনে অনেক বিখ্যাত কবির জন্ম হয়েছে। এমনি একজন বিখ্যাত কবি হলেন পাই চু ই।
চীনের বর্তমান শানসি প্রদেশের থাইইয়ুয়ান শহরে তার জন্ম ৭৭২ খ্রিস্টাব্দে। তার পরিবারের আর্থিক অবস্থা তেমন ভালো ছিল না। তবে পণ্ডিত হিসেবে তাদের পরিবারের খ্যাতি ছিল। পাই চু ইর শৈশবের অনেকটা সময় কেটেছে হ্যনান প্রদেশের চাংইয়াং শহরে।
দশ বছর বয়সের সময় তাকে পরিবারের থেকে দূরের এক শহরে আত্মীয় বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়। কারণ সেসময় উত্তর চীনে যুদ্ধ দেখা দিয়েছিল। তাকে দক্ষিণে সুচৌ শহরের নিরাপদ আশ্রয়ে পাঠিয়ে দেয়া হয়। তারুণ্যে তিনি সরকারি চাকরি পরীক্ষায় কৃতকার্য হয়ে ছোট একটি পদে চাকরি জীবন শুরু করেন।
তিনি দরবারের জটিলতায় পড়ে যান এবং তার অনেক শত্রু সৃষ্টি হয়। ফলস্বরূপ সম্রাটের বিরাগভাজন হয়ে নির্বাসনে যেতে হয় তাকে। পরে অবশ্য নতুন সম্রাটের আমলে আবার দরবারে ফিরে আসতে পারেন।
৮২৫ খ্রিস্টাব্দে তিনি সুচৌ শহরের গভর্নর নিযুক্ত হন। এর কিছুকাল পরে তিনি অবসরে যান। তিনি বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারী ছিলেন। শেষ জীবনে মঠে জীবন কাটান। পাই ই চু দুই হাজার আটশো’র বেশি কবিতা লিখেছেন। তার কবিতা চীন ও জাপানে সমান জনপ্রিয়তা পায়।
পাইয়ের কবিতা সরল এবং সহজে বোধগম্য হওয়ায় জনসাধারণের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। তিনি সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকেও অনেক কবিতা লিখেছেন। সমসাময়িক সামাজিক অবিচার, দুর্নীতি ইত্যাদির বিরুদ্ধে তার পরিহাসমূলক কবিতাগুলো সমাজের অসংগতিকে তীব্রভাবে আঘাত করেছে।
আবার প্রেম ও প্রকৃতি বিষয়ক কবিতাগুলো স্নিগ্ধ সারল্য পাঠকের মন জয় করেছে।
৮৮৬ সালে পাই চু ই মৃত্যুবরণ করেন। হ্যনান প্রদেশের সিয়াংশান মন্দিরের প্রাঙ্গণে তার সমাধি রয়েছে।