আপন আলোয়-৯০
এ পর্বে অন্তরঙ্গ আলাপনে অতিথি শাস্ত্রীয় কণ্ঠ ও যন্ত্রসংগীত শিল্পী বাবুল কৃষ্ণ বিশ্বাস
চিরায়ত চীনা সাহিত্য
চিরায়ত চীনা কবি: কাও ছি
ছবি: কবি কাও ছি
কাও ছি ছিলেন এক ভাগ্যহত কিন্তু অসাধারণ প্রতিভাবান কবি। মিং রাজবংশের শাসনের প্রথম দিকের কবি তিনি। তাকে বলা হয় মিং কবিতার অন্যতম সেরা কবি। তিনি চিতি, ছিংছিউচি নামেও পরিচিত।
কাও ছির জন্ম ১৩৩৬ সালে। সুচৌ শহরের কাছে ছোট্ট মফস্বল শহর পুলিতে। তার জন্মস্থানের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে উসং নদী। তিনি অভিজাত পরিবারের সন্তান ছিলেন। ইউয়ান রাজবংশের পতন এবং মিং রাজবংশের সূচনা পর্বের সময়কার অনেক রাজনৈতিক উত্থান পতন তার জীবনকে প্রভাবিত করেছিল।
মিং রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা সম্রাট হোং উর শাসনামলে কাও ছি দরবারে কাজ পান। তাকে ইউয়ান রাজবংশের সময়কার ইতিহাস লিখতে আদেশ দেয়া হয়। এই কাজ তিনি বেশ সাফল্যের সঙ্গে সমাপ্ত করেন। এরপর তাকে উপ-অর্থমন্ত্রীর পদে পদোন্নতি দেয়া হয়। অর্থ বিষয়ে তার কোনো অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান নেই- একথা বলে তিনি এই পদ প্রত্যাখ্যান করেন। দরবারের কাজ ছেড়ে দিয়ে তিনি পুলি টাউনের ব্লু হিল পাহাড়ে চলে যান এবং সেখানে শিক্ষকতা করে জীবিকা নির্বাহ করতে থাকেন। রাজকীয় মন্ত্রীর পদ প্রত্যাখ্যান করায় সম্রাট হোং উ কবির উপর চটে যান। তিনি মনে করেন কাও ছি রাজকার্যে অসহযোগিতা করছেন। ১৩৭৪ সালে তাকে বিদ্রোহের ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে অপবাদ দিয়ে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। আদেশ দেয়া হয় যেন তাকে আট টুকরো করে হত্যা করা হয়। তখন কাও ছির বয়স ছিল মাত্র ৩৯ বছর।
তবে কবিকে হত্যা করা হলেও তার কবিতাকে মুছে ফেলা যায়নি। কাও ছির একটি বিখ্যাত কবিতা হলো ফার্ম হাউজ বা খামার বাড়ি।
খামার বাড়ি
আমি একটি চরকার শব্দ শুনতে পাচ্ছি
মিশে যাচ্ছে প্রবাহিত জলের ধ্বনির সঙ্গে
দেখতে পাচ্ছি একটি কাঠের সাঁকো
বসন্তের শুরুতে কিছু পাতাহীন গাছ
কোথা থেকে এত সুরভি ভেসে আসছে বাতাসে?
আহ, আমার প্রতিবেশী বিকেলের চা তৈরি করছে!
এ কবিতায় যে শান্তিপূর্ণ জীবনের ছবি ফুটে ওঠে সেটাই কাও ছির কবিতার মূল বৈশিষ্ট্য। তিনি চিরায়ত চীনা সাহিত্যের অন্যতম সেরা কবি হিসেবে গণ্য।
অন্তরঙ্গ আলাপন
কুমিল্লা-চাঁদপুরে হায়ার-ক্লাসিক্যাল যন্ত্রসংগীত হারিয়ে যেতে বসেছে: বাবুল কৃষ্ণ বিশ্বাস
ছবি: আপন আলোয় ৯০তম পর্বের অতিথি শাস্ত্রীয় কণ্ঠ ও যন্ত্রসংগীত শিল্পী বাবুল কৃষ্ণ বিশ্বাস।
বৃহত্তর কুমিল্লার শাস্ত্রীয় কণ্ঠ ও যন্ত্রসংগীত শিল্পী এবং প্রশিক্ষক বাবুল কৃষ্ণ বিশ্বাস।
বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনে উচ্চাঙ্গ ও নজরুল সংগীতশিল্পী এবং সরোদ, বেহালা, বাঁশী ও এসরাজে তালিকাভুক্ত শাস্ত্রীয় যন্ত্রসংগীত শিল্পী তিনি।
বাজাতে পারেন সেতার, দিলরুবা, সন্তুর, তবলা, মৃদঙ্গসহ ২০/২২টি বাদ্যযন্ত্র। কুমিল্লার স্থানীয় মলয়া সংগীতেরও চর্চা করেন তিনি।
ছবি: আপন আলোয় অনুষ্ঠানে মাহমুদ হাশিমের মুখোমুখী শাস্ত্রীয় কণ্ঠ ও যন্ত্রসংগীত শিল্পী বাবুল কৃষ্ণ বিশ্বাস।
কুমিল্লার গীতিগুঞ্জ সংগীত একাডেমীর পরিচালক এবং চাঁদপুরের মৃদঙ্গ শিল্পকলা একাডেমির অধ্যক্ষ বাবুল বিশ্বাস। কচুয়া উপজেলা শিল্পকলা একাডেমির প্রশিক্ষণ প্রধান তিনি।
সংগীতে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে চাঁদপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমী সম্মাননা ও কুমিল্লার শ্রী চৈতন্য শিক্ষা সংস্কৃতি সংঘ (ইসকন) সম্মাননা লাভ করেছেন বাবুল বিশ্বাস।
চীন আন্তর্জাতিক বেতারের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে বললেন কুমিল্লা ও চাঁদপুরে শাস্ত্রীয় কণ্ঠ ও যন্ত্রসংগীত চর্চার বিষয়ে। বাঁশি, বেহালা, সরোদ, সেতারের মতো ‘হায়ার ক্লাসিক্যাল’ বাদ্যযন্ত্রগুলোর চর্চা তেমন আর হচ্ছে না বলে দুঃখ এই গুণী শিল্পীর। এগুলো হারিয়ে যেতে বসেছে বলে মনে করেন তিনি। তবে বৃহ্ত্তর কুমিল্লাসহ দেশের অনেক জায়গায় অনেক শিল্পী মলয়া সংগীতের চর্চা করছেন বলে জানালেন তিনি।
বাঁশি আর সরোদ বাদনের পাশাপাশি শুনিয়েছেন মলয়া ও নজরুল সংগীত।
সিএমজি বাংলা’র ফেসবুক পাতা facebook.com/cmgbangla এবং ইউটিউব লিঙ্ক youtube.com/cmgbangla তে গিয়েও আমাদের অনুষ্ঠান সম্পর্কে জানাতে পারেন আপনার মূল্যায়ন।
পরবর্তী অনুষ্ঠানে আমরা বাংলাদেশ-চীনের সংস্কৃতিক অঙ্গনের আরো কিছু খবর এবং গুণিজনের অন্তরঙ্গ আলাপন নিয়ে হাজির হবো আপনাদের সামনে। সে পর্যন্ত ভালো থাকুন।
অনুষ্ঠান পরিকল্পনা ও সাক্ষাৎকার গ্রহণ: মাহমুদ হাশিম
প্রতিবেদন: শান্তা মারিয়া।
অডিও সম্পাদনা: তানজিদ বসুনিয়া।