আপন আলোয়-৮৯
আপন আলোয়-৮৯
এ পর্বে অন্তরঙ্গ আলাপনে অতিথি নাট্যজন, লেখক ও আলোকচিত্রি শাহজাহান চৌধুরী
চিরায়ত চীনা সাহিত্য
প্রাচীন চীনের বিখ্যাত দুই কবিভ্রাতা
ছবি: কবি ছাও ফি ও কবি ছাও চি
প্রাচীন চীনের দুজন বিখ্যাত কবি ছিলেন ছাও ফি ও ছাও চি। তারা দুই ভাই। সমরনায়ক ও কবি ছাও ছাও এর দুই পুত্র। বাবার মতো দুজনেই কবিত্ব শক্তি পেয়েছিলেন সেই সঙ্গে সমরবিদ্যাও। চীনের ইতিহাসে তিন রাজ্য সময়ের কবি ছিলেন তারা। এদের মধ্যে বড় ভাই ছিলেন ছাও ফি। তিনি ছাও ওয়েই সাম্রাজ্যের প্রথম সম্রাট ছিলেন। ১৮৭ খ্রিস্টাব্দে ছাও ফি জন্মগ্রহণ করেন। তার আরেকটি নাম চিহুয়ান। ২২৬ খ্রিস্টাব্দে তার মৃত্যু হয়। ছাও ছাও তার বাবার মতোই বড় যোদ্ধা ছিলেন। পাশাপাশি তিনি ছিলেন কবি ও লেখক। তিনি ইয়ান ক্য সিং নামে বিশেষ ধরনের চীনা কবিতা লিখেছেন। এই স্টাইলে এক পংক্তিতে ৭টি শব্দ থাকে। কবিতার পাশাপাশি ছাও ফি বিভিন্ন বিষয়ে অনেক প্রবন্ধ লিখেছেন। ছাও চিও একই স্টাইলে কবিতা লিখতেন এবং এ ধারায় ভাইয়ের চেয়ে তার কবিতাই বেশি জনপ্রিয়তা পায়।
ছাও চি ছিলেন ছোট ভাই। কিন্তু কাব্য প্রতিভায় তিনি ছাও ফির চেয়েও বড় ছিলেন। তবে তাদের দুর্ভাগ্য ছিল রাজ্যশাসক হওয়া। কারণ রাজ্য শাসন মানেই ক্ষমতার দ্বন্দ্ব। ছাও চি তার প্রতিভার জন্য পিতার প্রিয়ভাজন ছিলেন। পরে অবশ্য স্পষ্টবাদিতা ও ঔদ্ধত্যের কারণে বিরাগভাজনও হন।
ছাও ফি সম্রাট হয়ে নিজের সিংহাসন নিষ্কন্টক করতে ভাইদের দূর গ্রামে নির্বাসনে পাঠিয়ে দেন। এটি ছিল ছাও চির অত্যন্ত মনোকষ্টের কারণ। এই দুঃখ থেকেই তিনি লেখেন একটি কবিতা যা কালের করাল স্পর্শ এড়িয়ে আধুনিক বিশ্বেও টিকে আছে এবং জনপ্রিয়তাও পেয়েছে।
সীমের দানার কান্না
পাত্রে সিদ্ধ হচ্ছে সীম, তৈরি হবে জাউ
সিদ্ধ ডাল ছেঁকে তুলে বানানো হবে ঝোল
পাত্রের নিচে চুলায় জ্বলছে সীমের শুকনো লতা
পাত্রের ভিতরে সেই দুঃখে কাঁদছে সীমের দানা
আমরা তো ভাই, জন্মেছি একই উৎস থেকে
আমাকে পোড়াতে তাহলে এত তাড়া কেন তোর?
ছাও ফি মৃত্যুশয্যায় তাদের সবচেয়ে ছোট ভাই ছাও রুইকে সম্রাটের আসনে বসিয়ে যান। ছাও রুই কবি ছিলেন না। তবে ভাইদের দুজনের কবিতাই তিনি সংরক্ষণ করার ব্যবস্থা করেন। চিরায়ত চীনা সাহিত্যে ছাও ফি এবং ছাও চির কবিতা আজও ক্ল্যাসিক হিসেবে গণ্য।
অন্তরঙ্গ আলাপন
নাটকের উর্বরভূমি কুমিল্লায় এখন দর্শকের আকাল: শাহজাহান চৌধুরী
ছবি: নৃত্যনাট্য গোমতি পাড়ে আমার কুমিল্লায় সহশিল্পীর সঙ্গে শাহজাহান চৌধুরী
কুমিল্লার নাট্যাঙ্গনের বিশিষ্ট নাট্যজন শাহজাহান চৌধুরী।
একাধারে তিনি নাট্য নির্দেশক, সংগঠক, আলোকচিত্রি, লেখক ও সমাজকর্মী। প্রতিবিম্ব থিয়েটার, কুমিল্লার সভাপতি শাহজাহান চৌধুরী
সামাজিক-সাংস্কৃতি সংগঠন সংলাপেরও প্রতিষ্ঠাতা-পরিচালক ।
বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনে তালিকাভুক্ত নাট্যশিল্পী তিনি। দীর্ঘ প্রায় পাঁচ দশকের নাট্য-অভিযাত্রায় ২৬টি নাটকে নির্দেশনা দিয়েছেন। অভিনয় করেছেন প্রায় ৮০০ প্রদর্শনীতে। জেলা শিল্পকলা একাডেমিসহ কুমিল্লা সকল সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে তার সরব উপস্থিতি।
তার প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে- গবেষণা গ্রন্থ কুমিল্লার নাট্যাঙ্গন ও আমি, ৪০ মুক্তিযোদ্ধার জবানবন্দি, অস্তিত্ব, সৃহৃদ স্বজন স্মৃতি; হৃদয়ে মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধ ও একজন ধীরেন্দ্রনাথ এবং নজরুল স্মৃতি অ্যালবাম।
ছবি: কাজী নজরুল ইসলামের শিউলীমালায় সহশিল্পীদের সঙ্গে শাহজাহান চৌধুরী
নাটক তথা সংস্কৃতিতে ভূমিকার স্বীকৃতি হিসেবে জেলা শিল্পকলা একাডেমি সম্মাননা, পশ্চিমবঙ্গের বাংলার লোকনাট্য প্রয়াস সম্মাননাসহ দেশবিদেশে বহু পুরস্কার ও সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন শাহজাহান চৌধুরী।
চীন আন্তর্জাতিক বেতারের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে বললেন কুমিল্লার প্রায় দেড় শো বছরের নাট্যচর্চার ইতিহাস সম্পর্কে।
কুমিল্লায় নাট্যচর্চার প্রসারে শচীন দেব বর্মনের স্মৃতিবিজড়িত ভার্নাল থিয়েটার থেকে শুরু করে স্বাধীনতা-উত্তরকালে প্রতিষ্ঠিত যাত্রিক, জনান্তিক, প্রতিবিম্বসহ বিভিন্ন নাট্যদলের ভূমিকার কথা তুলে ধরেন শাহজাহান চৌধুরী। মোবাইল সংস্কৃতি আর ভারতীয় চ্যানেলের দৌরাত্বে একসময় নাটকের উর্বরভূমি কুমিল্লায় দর্শক কমছে বলে খেদ তার। নাট্যচর্চায় তাঁর দাবি আরও সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার।
সিএমজি বাংলা’র ফেসবুক পাতা facebook.com/cmgbangla এবং ইউটিউব লিঙ্ক youtube.com/cmgbangla তে গিয়েও আমাদের অনুষ্ঠান সম্পর্কে জানাতে পারেন আপনার মূল্যায়ন।
পরবর্তী অনুষ্ঠানে আমরা বাংলাদেশ-চীনের সংস্কৃতিক অঙ্গনের আরো কিছু খবর এবং গুণিজনের অন্তরঙ্গ আলাপন নিয়ে হাজির হবো আপনাদের সামনে। সে পর্যন্ত ভালো থাকুন।
অনুষ্ঠান পরিকল্পনা ও সাক্ষাৎকার গ্রহণ: মাহমুদ হাশিম
প্রতিবেদন: শান্তা মারিয়া।
অডিও সম্পাদনা: তানজিদ বসুনিয়া।