আপন আলোয়-৮৮
এ পর্বে অন্তরঙ্গ আলাপনে অতিথি নজরুলসংগীত শিল্পী ও প্রশিক্ষক তাপস কুমার দাশ
চীরায়ত চীনা সাহিত্য
কবি সাও সাও: শিল্প চর্চা ও সমরে সমানভাবে পারদর্শী ছিলেন যিনি
যুদ্ধ, নিষ্ঠুরতা, কূটনীতি আর শিল্প এবং কাব্যচর্চা এগুলো খুবই বিপরীতধর্মী বিষয়। কিন্তু এই বিপরীতমুখী বিষয়গুলোকে যিনি অতি সহজেই আয়ত্ত করেছিলেন তিনি প্রাচীন চীনের কবি সাও সাও। শুধু কবি হিসেবেই নয়, প্রাচীন চীনের একজন রাজকীয় ব্যক্তিত্ব হিসেবেও খ্যাতিমান সাও সাও। তিনি মাংদা নামেও পরিচিত। তিনি ছিলেন একজন রাষ্ট্রনায়ক, বীর যোদ্ধা, ক্যালিগ্রাফার এবং কবি।
সাও সাও এর জন্ম ১৫৫ খ্রিস্টাব্দে উত্তর চীনের ফেই নগরে পূর্ব হান রাজবংশের সময়ে। এটি বর্তমানের আনহুই প্রদেশে অবস্থিত। তিনি ছিলেন বিখ্যাত রাজপুরুষ সাও থাং এর পালক পুত্র। তিনি নিজেও একসময় দরবারে প্রভাবশালী হন এবং সম্রাটের পরই ক্ষমতাশালী হয়ে ওঠেন। পরবর্তিকালে তিনি সম্রাট হন এবং সাও ওয়েই রাজবংশের প্রতিষ্ঠা করেন। অনেক নারীর সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বিয়েও করেন অনেকগুলো।
কিশোর বয়স থেকেই সাও সাও যুদ্ধবিদ্যা এবং সংগীত ও কাব্যকলার মতো বিপরীত বিষয়ে পারদর্শী হয়ে ওঠেন। তিনি অপরাজেয় বীর হিসেবে খ্যাতি পান। তিনি২২০ খ্রিস্টাব্দের ১৫ মার্চ মৃত্যুবরণ করেন। উত্তর চীনে বিশাল এক সাম্রাজ্যের শাসক হিসেবে তার মৃত্যু হয়। তার দুই ছেলে সাও ফি এবং সাও চি ছিলেন কবি।
তিনি কবি সু কানের পৃষ্ঠপোষকও ছিলেন। তাদের একত্রে সাও কবি নামেও অভিহিত করা হয়।
তিনি হান কবিতার বিশেষ স্টাইল থেকে প্রেরণা পেলেও তার নিজস্ব কাব্যরীতি ছিল। এই কাব্য রীতির একটি নাম হলো হান ফু বা ইয়ুয়ে ফু। তিনি এক লাইনে পাঁচ শব্দ এবং এক লাইনে চার শব্দ এই দুই রকম স্টাইলেই লিখেছেন। বড় কবিতা ও ছোট কবিতাও লিখেছেন তিনি। তার একটি বিখ্যাত চতুর্দশপদী কবিতার নাম হলো ‘যদিও কচ্ছপ অনেক বছর বেঁচে থাকে।
যদিও কচ্ছপ অনেক বছর বেঁচে থাকে
কবি সাও সাও
যদিও জাদুশক্তিতে বলীয়ান কচ্ছপ দীর্ঘজীবী হয়,
তবু তার জীবনের সীমা রয়েছে।
যদিও ডানাবিশিষ্ট সর্পরা ওড়ে কুয়াশাচ্ছন্ন্ আকাশে
তবু শেষ পর্যন্ত তারা ধুলো এবং ছাইতে পরিণত হয়।
একটি বৃদ্ধ যুদ্ধের ঘোড়া আস্তাবলে বাঁধা থাকলেও
সে ছুটতে চায় হাজার লি পথ।
একজন মহৎ-হৃদয় মানুষ বৃদ্ধ হলেও
তার গর্বিত উচ্চাকাঙ্ক্ষা ত্যাগ করেন না।
মানুষের আয়ু দীর্ঘ হোক বা স্বল্প,
শুধুমাত্র স্বর্গের ইচ্ছার উপর তা নির্ভর করে না;
যে ভালো খায় এবং প্রফুল্ল থাকে
অনেক বৃদ্ধ বয়স পর্যন্ত বাঁচতে পারে।
আমি তাই আনন্দিত মনে
গুনগুন করে গাই এই গান।
প্রাচীন চীনা ইতিহাস এবং সাহিত্যে সাও সাও এক বিশিষ্ট স্থান অধিকার করে আছেন। তিনি আধুনিক সাহিত্য এবং কম্পিউটার গেমের জগতেও দারুণ জনপ্রিয় এক চরিত্র। তাকে ঘিরে নির্মিত হয়েছে অনেক চলচ্চিত্র।
অন্তরঙ্গ আলাপন
কুমিল্লায় আমরা নজরুলের মূল সুরে স্ট্যান্ড করছি: তাপস কুমার দাশ
আপন আলোয় ৮৮তম পর্বের অতিথি নজরুলসংগীত শিল্পী তাপস কুমার দাশ।
কুমিল্লার নজরুল সংগীত অঙ্গনে সুপরিচিত নাম তাপস কুমার দাশ।
কুমিল্লা বেতারে বিশেষ গ্রেডের তালিকাভুক্ত শিল্পী তিনি। মঞ্চের পাশাপাশি সংগীত পরিবেশন করছেন বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলেও।
কুমিল্লার ঐতিহ্যবাহী সংগীত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ‘সঙ্গীত শিক্ষার্থী সম্মিলনে’র সাধারণ সম্পাদক ও সিনিয়র শিক্ষক তাপস দাশ। ২০১৫ সাল থেকে নজরুল সঙ্গীত শিল্পী পরিষদ, কুমিল্লা শাখার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।
চীন আন্তর্জাতিক বেতারের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের স্মৃতিবিজড়িত কুমিল্লায় নজরুল সংগীত চর্চার বিষয়ে বললেন তাপশ দাশ। কাকা বরেণ্য সংগীতজ্ঞ সুধীন দাশের দেখানো পথে মূল সুরে নজরুলের গান করেন এবং শেখান বলে জানালেন তিনি। ক্যাসেটনির্ভর না হয়ে স্বরলিপি মেনে শুদ্ধভাবে সবাই নজরুলের গান শিখবেন-গাইবেনু এটাই শিল্পীর একান্ত চাওয়া।
সিএমজি বাংলা’র ফেসবুক পাতা facebook.com/cmgbangla এবং ইউটিউব লিঙ্ক youtube.com/cmgbangla তে গিয়েও আমাদের অনুষ্ঠান সম্পর্কে জানাতে পারেন আপনার মূল্যায়ন।
পরবর্তী অনুষ্ঠানে আমরা বাংলাদেশ-চীনের সংস্কৃতিক অঙ্গনের আরো কিছু খবর এবং গুণিজনের অন্তরঙ্গ আলাপন নিয়ে হাজির হবো আপনাদের সামনে। সে পর্যন্ত ভালো থাকুন।
অনুষ্ঠান পরিকল্পনা ও সাক্ষাৎকার গ্রহণ: মাহমুদ হাশিম
প্রতিবেদন: শান্তা মারিয়া।
অডিও সম্পাদনা: তানজিদ বসুনিয়া।