আপন আলোয়-৮০
অন্তরঙ্গ আলাপন
বুদ্ধিবৃত্তিক রবীন্দ্রচর্চায় আমরা যথেষ্ট অগ্রসর নই: অধ্যাপক গোলাম মুস্তাফা
ছবি: প্রাবন্ধিক, অধ্যাপক গোলাম মুস্তফা।
এক.
রবীন্দ্রনাথের কাজের মধ্যে একটা সমগ্রতা ছিল। তিনি মানুষ নিয়ে ভাবতেন, মানুষকে বিকশিত করতে চাইতেন; পরিপূর্ণ করতে চাইতেন। মানুষের বিকশিত হবার এবং পরিপূর্ণ হবার যে সাধনা এবং তাঁর যে প্রেরণা, তাঁর যে প্রচেষ্টা এটি চিরকালীন। আমরা যখনই কোনো সমস্যা বা সংকটের মুখোমুখি হবো তখন রবীন্দ্রনাথ এবং তাঁর মতো যারা বড় মাপের প্রতিভা, যারা মানব সমাজকে দিকনির্দেশ দিয়েছেন, তাদের প্রাসঙ্গিকতা সবসময় থাকবে।
দুই.
রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার কথা যদি আমরা বলি, আমি একটু হতাশাই ব্যক্ত করবো। আনুষ্ঠানিকতার বাইরে রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে ভাবা- সেটি আমাদের দেশে খুবই কম হচ্ছে। একেবারে যে হচ্ছে না তা নয়, তবে সেগুলো অনেকটাই বিদ্যায়তনিক।
রবীন্দ্রনাথের যে সামগ্রিকতা- যেমন পশ্চিমবঙ্গে রবীন্দ্রনাথের শিক্ষা, দর্শন, তাঁর রাজনৈতিক চিন্তা, কৃষিভাবনা, সমবায়- নানাদিক নিয়ে কাজ হচ্ছে। আমাদের দেশে সেই তুলনায় বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার ক্ষেত্রে আমরা এখনো অতটা প্রবলভাবে বলতে পারবো না যে, আমরা রবীন্দ্রচর্চায় যথেষ্ট পরিমাণে অগ্রসর।
তিন.
এটা একটা ইউটোপিয়ান ধারনা যে আমরা সাধারণ মানুষের কাছে রবীন্দ্রনাথকে পৌঁছাবো। নাগরিক বৃত্তের বাইরে নিয়ে গিয়ে রবীন্দ্রনাথকে গ্রহণযোগ্য করে তোলা সহজ কাজ নয়। কারণ এটি করতে হলে আমাদের যেটি করতে হবে- যাদের কাছে রবীন্দ্রনাথকে পৌঁছতে চাই তাদের রবীন্দ্রনাথের বাণী উপলব্ধির যোগ্য করতে হবে। কিন্তু এ কাজটা করবে কে? বিড়ালের গলায় ঘন্টাটা বাঁধবে কে? আমাদের মধ্যে ভণিতা আছে। ভণিতা দিয়ে কিন্তু রবীন্দ্রনাথকে সর্বত্র ছড়ানো যাবে না।