ঢাকাকে বাঁচাতে ইউটোপিয়ান কোনো প্ল্যান নয়, মৌলিক পরিবর্তন আবশ্যক: স্থপতি মুস্তাফা খালীদ পলাশ
ছবি: চীন আন্তর্জাতিক বেতারের আপন আলোয় অনুষ্ঠানে স্থপতি মুস্তাফা খালীদ পলাশ।
এক. স্থাপত্য তো শিল্প, এটা বলাই হয়- মাদার অফ অল আর্টফর্ম। কিন্তু এটা নিয়ে আমার সংশয় আছে। ফরমায়েশি কাজ কখনো উচ্চ মানের শিল্প হয় না; হতে পারেও না। আমি মনে করি প্রযুক্তি ও শিল্পের একটা মাঝামাঝি জায়গায় অবস্থান করে স্থাপত্য।
স্থাপত্য শুধুমাত্র নান্দনিকতার বিষয় নয়, এর সঙ্গে সমাজ জড়িত, মানুষ জড়িত, প্রকৃতি জড়িত। আমি এখন মনে করি, আমি তো প্রকৃতি ধ্বংস করি আসলে। যে কোনো জায়গায় স্থাপত্য বসানো মানে ম্যান মেড- মনুষ্য তৈরি একটা জিনিসকে বসাচ্ছি, ইমপ্লান্ট করছি। এনিথিং ইমপ্লান্টেড ইজ নট গুড ফর ন্যাচার।
দুই. ঢাকা ইজ অ্যা সিটি উইদাউট ল্যান্ডস্ক্যাপ- হয়ে গেছে। কংক্রিটের জঙ্গলই বলতে পারেন। ঢাকার পরিসর বাড়াতে হবে, বিস্তৃত করতে হবে। এই যে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে হচ্ছে, মেট্রোরেল হচ্ছে- এগুলো ঢাকার মধ্যে করে লাভ কী? এর একটা যদি চলে যেত পূর্বে, একটা পশ্চিমে, একটা উত্তরে, একটা দক্ষিণে- তাহলে আমি আধা ঘন্টার মধ্যে গিয়ে মানিকগঞ্জে থাকতে পারতাম; আধা ঘন্টার মধ্যে গিয়ে নরসিংদী থাকতে পারতাম।
ছবি: স্থপতি মুস্তাফা খালীদ পলাশের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপত্যকর্ম; ঢাকার বসুন্ধরায় পরিবেশবান্ধব নির্মাণশৈলিতে নির্মিত গ্রামীণ ফোনের হেডকোয়ার্টার।
তিন. আমাদের পরিকল্পনার অভাব আছে। আমরা জানি ডেটেইল এরিয়া প্ল্যান হচ্ছে- ওখানে অনেক কিছু বলা হয়েছে- ইউটোপিয়ান। সেগুলো বাস্তবায়ন যোগ্য কিনা সেটাও দেখতে হবে। ঢাকাকে বাঁচাতে কিছু একটা মৌলিক পরিবর্তন আবশ্যক।
চীন আন্তর্জাতিক বেতারের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে আধুনিক স্থাপত্যশিল্প নিয়ে নিজের ভাবনার কথা তুলে ধরেছেন বর্তমান সময়ের খ্যাতিমান স্থপতি মুস্তাফা খালীদ পলাশ। অপরিকল্পিত নগরায়ণে রাজধানী ঢাকার মরণদশা এবং এ থেকে পরিত্রাণের উপায়ও বাতলেছেন। জানিয়েছেন চিত্রকলা ও সংগীত নিয়ে তাঁর প্যাশনের কথা।
সাক্ষাৎকার গ্রহণ, গ্রন্থনা ও উপস্থাপনা: মাহমুদ হাশিম।
অডিও সম্পাদনা: তানজিদ বসুনিয়া।